প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়

পারভেজ হত্যা: শিক্ষার্থী টিনা গ্রেফতার

প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নাম আসা দুই নারী শিক্ষার্থীর একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থীর নাম ফারিয়া হক টিনা, তিনি ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সরোয়ার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে ফারিয়া হক টিনাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এর আগেও বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত ২৩ এপ্রিল প্রধান আসামি মেহরাজকে গাইবান্ধা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ২১ এপ্রিল কুমিল্লার তিতাস থেকে হৃদয় মিয়াজী নামে আরেক আসামিকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এছাড়া, মাহাথির হাসান ও আল কামাল শেখ নামে দুইজন গ্রেফতার হওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং বর্তমানে তারা কারাগারে রয়েছেন। আলভী হোসেন জুনায়েদ ও আল আমিন সানি নামে আরো দুইজন রিমান্ড শেষে কারাগারে আছেন। ফারিয়া হক টিনার গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে এই মামলায় মোট সাতজনকে গ্রেফতার করা হলো।

এর আগে গত ২৩ এপ্রিল আদালত জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে হত্যার ঘটনায় নাম আসা দুই তরুণীকে খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।

পারভেজ হত্যা, সেই ২ ছাত্রীকে বহিষ্কার

ঘটনার সূত্রপাত গত ১৯ এপ্রিল বিকেলে। রাজধানীর বনানীতে প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থীর মধ্যে বিবাদের জেরে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র জাহিদুল ইসলাম পারভেজকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, পারভেজ ক্যাম্পাসের পাশে একটি দোকানে বন্ধুদের সঙ্গে সিঙ্গারা খাচ্ছিলেন। তাদের পাশে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীসহ প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির ইংরেজি ও ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের কয়েকজন নবীন শিক্ষার্থী ছিলেন। এক পর্যায়ে ওই দুই ছাত্রী অভিযোগ করেন যে পারভেজ তাদের উত্ত্যক্ত করেছেন। তারা বিষয়টি প্রাইমএশিয়া ইউনিভার্সিটির প্রক্টরকে জানান।

প্রক্টর পারভেজকে ডেকে পাঠালে তিনি দাবি করেন, বন্ধুদের সঙ্গে নিজেদের আলাপের বিষয় নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন এবং কাউকে উত্ত্যক্ত করেননি। এক পর্যায়ে ওই দুই ছাত্রীর কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হলে পারভেজ ক্ষমাও চান।

প্রাইম এশিয়া শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যা, গ্রেফতার ৩

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রক্টরের অফিস থেকে বেরিয়ে আসার পর ইংরেজি বিভাগের কিছু শিক্ষার্থী পারভেজকে হুমকি দেন। এরপর কিছু বহিরাগত এসে পারভেজের ওপর আক্রমণ চালায় এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার বুকে আঘাত করে পালিয়ে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় পারভেজকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই হুমায়ুন কবীর বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দুজন নেতাসহ আটজনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়।

এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন- মেহেরাজ ইসলাম (২০), আবু জর গিফারী পিয়াস (২০), মাহাথির হাসান (২০), সোবহান নিয়াজ তুষার (২৪), হৃদয় মিয়াজী (২৩), রিফাত (২১), আলী (২১) ও ফাহিম (২২)। পুলিশ ঘটনাটির তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।

স্বাআলো/এস