বিএনপি ক্ষুব্ধ: ‘এপ্রিল নির্বাচন মূলত বিলম্বের কৌশল’

ঢাকা অফিস ঢাকা অফিস | June 7, 2025

জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের ভাষণকে ‘রাজনৈতিক ভব্যতার সীমা অতিক্রম’ এবং ‘একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত’ বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। দলটি বলেছে, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা মূলত নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল।

শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে যেকোনো একটি দিনে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।” তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন শিগগিরই রোডম্যাপ ঘোষণা করবে।

তবে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির এক বিবৃতিতে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টার এ বক্তব্যে ‘গণতন্ত্রে উত্তরণ বিলম্বিত হবে’ এবং এপ্রিল মাস নির্বাচনের জন্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য সময় নয়। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, “রমজান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা এবং আবহাওয়াগত জটিলতার কারণে এপ্রিল নির্বাচন আয়োজনের জন্য অনুপযুক্ত।”

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলেন, “প্রধান উপদেষ্টা ও তার উপদেষ্টা পরিষদ নিরপেক্ষতা হারিয়েছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত দেশের সংকট আরও ঘনীভূত করবে।”

‘বিশেষ গোষ্ঠীর’ প্রভাবের অভিযোগ

বিএনপি অভিযোগ করেছে, সরকার জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির পরামর্শ মেনে চলেছে, অথচ বিএনপি ও সমমনা ৩০টিরও বেশি দলের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির ভাষ্য, “সরকার যে এক বিশেষ গোষ্ঠীর দ্বারা প্রভাবিত হয়ে বৃহত্তর মত উপেক্ষা করেছে, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।”

বন্দর ও করিডর ইস্যুতে ক্ষোভ

প্রধান উপদেষ্টার ভাষণে চট্টগ্রাম বন্দর ও মানবিক করিডর বিষয়েও আলোচনা হয়। তিনি বলেন, “চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির হৃৎপিণ্ড, একে বড় ও শক্তিশালী করতেই উন্নত বিশ্বের অংশীদারিত্ব দরকার।” এ বক্তব্যেও বিএনপির আপত্তি রয়েছে। তারা বলছে, এসব বিষয়ে আলোচনা অন্তর্বর্তী সরকারের ম্যান্ডেটের বাইরে।

সেনাপ্রধানের পরামর্শ ও বিএনপির অবস্থান

প্রসঙ্গত, নির্বাচন সময় নির্ধারণের প্রসঙ্গ প্রথমে আনেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। গত বছর সেপ্টেম্বরে তিনি রয়টার্সকে বলেন, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করা হবে। এই বক্তব্যের পর থেকেই বিএনপি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চায় বলে জানিয়ে আসছে।

গত ২৮ মে এক ভার্চুয়াল সমাবেশে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন,
“ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন হতে হবে, এবং হবে।”

সরকার অবস্থান পরিবর্তন না করলে?

সরকার যদি অবস্থান পরিবর্তন না করে তাহলে বিএনপির পরবর্তী করণীয় কী— সে বিষয়ে সরাসরি কিছু বলেননি দলটির সিনিয়র নেতারা। তবে এক নেতা বলেন, “আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছি। এখন বল সরকারের কোর্টে।”