ঢাকার খিলক্ষেতে দুর্গাপ্রতিমা ও মন্দির গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে, কুমিল্লার মুরাদনগরে ধর্ষণের ঘটনা এবং লালমনিরহাটে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে নরসুন্দর পিতা-পুত্রকে আটক করার ঘটনার প্রতিবাদে যশোরে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ।
সোমবার (৩০ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রেসক্লাব যশোরের সামনে ঘন্টাব্যাপি এই মানববন্ধনে সংগঠনের জেলা, উপজেলা ও পৌর কমিটির নেতৃবৃন্দসহ বিপুলসংখ্যক সনাতন ধর্মাবলম্বী অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিপংকর দাস রতন। বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি দুলাল সমাদ্দার, সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রতন আচার্য, সদর উপজেলার সভাপতি রবিন কুমার পাল, বাঘারপাড়া উপজেলার সদস্য সচিব প্রণয় সরকার, যশোর পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক উৎপল সরকার, শার্শা উপজেলার সভাপতি নীল কুমার সিংহ, ঝিকরগাছার সভাপতি দুলাল অধিকারী এবং মহিলা পরিষদের নেত্রী সুলতানা রহমান জলি।
বক্তারা বলেন, “৫ আগস্টের সরকার পরিবর্তনের পর সাধারণ মানুষ শান্তির আশায় বুক বেঁধেছিল। কিন্তু বর্তমানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন, মন্দির ও প্রতিমা ভাঙার ঘটনা বাড়ছে। খিলক্ষেতে বুলডোজার চালিয়ে মন্দির ও প্রতিমা গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন।”
তারা আরো বলেন, “লালমনিরহাটে মাত্র ১০ টাকার জন্য নরসুন্দর পিতা-পুত্রকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার এবং কুমিল্লার মুরাদনগরে এক বোনকে বিবস্ত্র করে ধর্ষণের ঘটনা প্রমাণ করে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা এখন হুমকির মুখে। যশোরের অভয়নগরের মসিহাটি গ্রামে হত্যাকাণ্ডের পর হিন্দুদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হলে সনাতন সমাজ কঠোর আন্দোলনে নামবে।”
বক্তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির পক্ষে অবস্থান নিয়ে বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরা যুগ যুগ ধরে সহাবস্থান করে আসছে। কোনো ধর্মের মোড়কে পুরুষতান্ত্রিক বা সাম্প্রদায়িক শক্তি বাঙালি জাতিকে বিভক্ত করতে পারবে না।”
তারা খিলক্ষেতের ঘটনায় প্রতিমা ভাঙার আগে পূর্ব নোটিশ না দেওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং কুমিল্লার ঘটনায় ধর্ষকের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে শাস্তির দাবি জানান।
পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা ঘোষণা দেন, “অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে আমরা রাজপথে থাকব, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ চালিয়ে যাব।”