ঢাকা অফিস: দেশে নতুন একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি’-এর আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। আলোচিত ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন দলটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। দলটির লক্ষ্য হিসেবে বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, সামাজিক ন্যায়বিচারের মাধ্যমে সুশাসন নিশ্চিত করা এবং সাধারণ জনগণকে রাজনৈতিকভাবে সচেতন করে তোলার কথা বলা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাজধানীর বনানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দলটির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। অনুষ্ঠানে দলের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন আহ্বায়ক মোহাম্মদ রফিকুল আমীন।
ঘোষণাপত্র পাঠকালে রফিকুল আমীন বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও দেশের মানুষ বঞ্চনা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে এবং এর থেকে মুক্তি পেতে জনগণ স্বৈরাচারকে বিদায় করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, মানুষের মৌলিক ও রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে ‘বাংলাদেশ আ-আম জনতা পার্টি’ অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে চায়।
তিনি আরও বলেন, তার দল দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সুশাসন প্রতিষ্ঠা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ, অসাম্প্রদায়িক সমাজ গঠন, সরকারি দপ্তরগুলোতে ডিজিটালাইজেশন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে রাজনীতি নিরুৎসাহিত করাসহ বিভিন্ন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে দলটির পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রতিশ্রুতি তুলে ধরা হয়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
১. ক্ষমতা কুক্ষিগত না করে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করে রাষ্ট্র পরিচালনা।
২. মুক্তিযুদ্ধ এবং ‘জুলাই ২৪’-এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করা।
৩. প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, সবার জন্য শিক্ষা, দুর্নীতিমুক্ত ব্যবস্থা, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ এবং জেন্ডার সমতা নিশ্চিতকরণ।
৪. উৎপাদনমুখী কৃষি, প্রযুক্তি ও কর্মমুখী শিক্ষা এবং মুক্তবাজার অর্থনীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন।
৫. সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ থেকে দেশকে রক্ষায় শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতি ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
৬. গ্রামীণ জীবনভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ এবং খাদ্য, বস্ত্র, স্বাস্থ্য, বাসস্থান ও শিক্ষার চাহিদা পূরণ।
৭. বহুদলীয় গণতন্ত্র এবং জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। দলে পরিবারতন্ত্র পরিহার করে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চা করা।
৮. সংবিধানের আলোকে মৌলিক মানবাধিকার সংরক্ষণ ও স্বাধীন বিচার বিভাগের মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা।
৯. নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে পৃথককরণ, প্রভাবমুক্ত বিচার ব্যবস্থা এবং প্রাতিষ্ঠানিক শুদ্ধাচার নিশ্চিত করে দুর্নীতি নির্মূল করা।
১০. জোট নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সমতা রক্ষা এবং প্রতিবেশীসহ সব রাষ্ট্রের সাথে ন্যায্যতার ভিত্তিতে সুসম্পর্ক বজায় রাখা।
১১. নতুন এই রাজনৈতিক দলটির আত্মপ্রকাশ দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার সৃষ্টি করেছে, বিশেষ করে এর নেতৃত্বে ডেসটিনি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের অন্তর্ভুক্তি।
স্বাআলো/এস