সম্পাদকীয়: বাংলাদেশে গড়ে একজন বছরে ৮২ কেজি খাবার অপচয় করছে। বাংলাদেশিদের খাবার অপচয়ের এই হার ভারত, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের চেয়েও বেশি।
জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক কর্মসূচি ইউনেপের ‘ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
খাদ্য অপচয়বিষয়ক গবেষক অধ্যাপক কামরুল হাসান বলেন, আমরা ‘এস্টিমেশন অব ওভারঅল ফুড লসেস অ্যান্ড ওয়েস্ট এট অল লেভেলস অব দ্য ফুড চেইন’ শীর্ষক এক গবেষণায় দেখেছি, উচ্চ আয়ের বাসাগুলোতে সপ্তাহে একজন মানুষ দুই কেজির বেশি খাবার অপচয় করে থাকেন। ‘অ্যাপ্রোপ্রিয়েট ডায়েট টু প্রিভেন্ট অ্যান্ড ফাইট ডিজিজের’ এক তথ্যে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত খেয়ে মানুষ মারা যাচ্ছে। এজন্য প্রচলিত কথায় আছে মানুষ খেয়ে মরে, না খেয়ে মরে না। এ তথ্যের সাথে বাংলা প্রবাদ কথা ‘ঊণো ভাতে দুনো বল. ভরা পেটে রসাতল’ এর বেশ মিল আছে। প্রবাদের সার কথা হলো অল্প খেলে দ্বিগুণ শক্তি হয় এবং বেশি খেলে সব কিছু নষ্ট হয়ে যায়।
খাদ্য অপচয়ের আর একটি কারণ হলো বেশি খাদ্য গ্রহণ। বিশ্ব জুড়ে যে খাদ্য সংকট চলছে তার জন্য দায়ী উৎপাদন ঘাটতি নয়, বলা যায় এই অপচয়ের প্রবণতা অনেকটা দায়ী। জাতিসংঘের বিশেষায়িত সংস্থা আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের প্রধান গিলবার্ট হুংবো বলেছিলেন, সম্পদের স্বল্পতা নয়, খাদ্যের অপচয়ই বিশ্বজুড়ে ক্ষুধার প্রধান কারণ। হালে নব্য ধনীরা খাদ্য অপচয়কে একটা ফ্যাশন বলে মনে করেন।
ইসলামী বিধান অনুযায়ী খাওয়া শেষে প্লেটটি চেটে খাওয়া সুন্নত। এখানে ধর্মের আনুগত্য থাক আর না থাক খাদ্যের শিক্ষাটি যে সুন্দর তাথে কোনো বিতর্ক থাকার কথা নয়। কিন্তু আমাদের মতো দরিদ্র দেশেও দেখা যাচ্ছে হালে প্লেট চেটে খাওয়াকে ছোটলোকী ভাবা হচ্ছে। ক্ষুধা লাগলে খেতে হবে এবং ক্ষুধা থাকতে খাওয়া বন্ধ করতে হবে তাহলে রোগ ব্যাধি যেমন কম হবে তেমনি খাদ্য অপচয়ও হবে না। কিন্তু এ সব নীতি কথা শোনার মতো মানুষের সংখ্যা খুবই কম।
স্বাআলো/এসআর