সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্বের বিরোধকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৩০ জুন) প্রেসক্লাব ফটকে ঘটে যাওয়া এই ঘটনায় প্রেসক্লাবের বর্তমান সভাপতি ও ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিনিধি আবুল কাশেমসহ ৩০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত সাংবাদিকদের অভিযোগ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আবু সাঈদ ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারীর নেতৃত্বে আল ইমরান, অমিত ঘোষ বাপ্পা এবং আলিপুর থেকে আনা ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও মাদকাসক্তরা সাংবাদিকদের ওপর এই বর্বরোচিত হামলা চালায়।
আহত সাংবাদিক ও প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রেসক্লাবে সভা করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। ঠিক তখনই আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীর নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালান। হামলায় আমাদের প্রায় ৩০ জন সদস্য আহত হন, অনেকের মাথা ফেটে যায়।
তিনি আরো অভিযোগ করেন, আবু সাঈদ ও বারী দীর্ঘদিন ধরে প্রেসক্লাব দখল করে রেখেছেন এবং তাদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে কেউ দাঁড়ালেই এমন হামলা চালানো হয়।
তবে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের একাংশের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বারী হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রেসক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত। আজ যেসব বহিরাগত সন্ত্রাসী এখানে এসেছিল, তারা মূলত প্রেসক্লাব দখলের চেষ্টা করেছিল। সাতক্ষীরার কর্মরত সাংবাদিকরা ঐক্যবদ্ধভাবে তাদের প্রতিহত করেছে। যে কারণে তারা ভেতরে প্রবেশ করতে পারেননি। তিনি দাবি করেন, প্রেসক্লাবে কোনো হামলার ঘটনা ঘটেনি, শুধু দখলের উদ্দেশে এসেছিলেন হামলাকারীরা। তিনি আরো জানান, বর্তমানে তারা নিয়মিতভাবে প্রেসক্লাবে অবস্থান করছেন এবং দায়িত্ব পালন করছেন।
হামলার সময় পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও তারা হামলাকারীদের থামানোর কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিক নেতারাও।
সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামিনুল হক বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ দ্রুত উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে উঠলে নিরাপত্তা জোরদারে সেখানে সেনাবাহিনীর একটি দলও মোতায়েন করা হয়। এখনো প্রেসক্লাব চত্বরে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় সাতক্ষীরার সাংবাদিক সমাজে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। দ্রুত জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিলো। গত ৫ আগস্ট একপক্ষ আবু সাঈদ ও আব্দুল বারীকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে একটি কমিটি গঠন করে। পরে অপরপক্ষ আবুল কাশেমকে সভাপতি এবং আসাদুজ্জামানকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করে প্রেসক্লাবের নতুন কমিটি গঠন করে। এই দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটেই সোমবারের হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করছেন অনেকে।
স্বাআলো/এস