মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সোহাগ হত্যার রেশ কাটতে না কাটতেই পুরান ঢাকায় আরেকটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটতে যাচ্ছিল। তবে এবার দায়িত্বশীল পুলিশ সার্জেন্ট ও স্থানীয় জনতার তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে বড় বিপদ থেকে রক্ষা পেলেন এক কিশোর।
রবিবার (১৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৮টা থেকে ৯টার দিকে রাজধানীর ওয়ারীর হাটখোলা এলাকায় ইলিসিয়াম ভবনের পেছনের গলিতে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ৯টার দিকে সৈয়দ রেদোয়ান মাওলানা (১৭) নামের এক কিশোরকে ৬-৭ জনের একটি দল ঘিরে ধরে বেধড়ক মারধর শুরু করে। হামলাকারীরা তার মাথায় মোটরসাইকেলের হেলমেট দিয়ে একের পর এক আঘাত করতে থাকে। একপর্যায়ে তারা ইট দিয়ে রেদোয়ানের মাথায় আঘাত করতে উদ্যত হলে, সেখানে উপস্থিত অন্তত ৫০-৬০ জন সাধারণ মানুষ ও দায়িত্বরত ট্রাফিক সার্জেন্ট দ্রুত এগিয়ে এসে তাদের প্রতিহত করেন।
জনতা ও পুলিশের বাধায় হামলাকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়। ঘটনাস্থল থেকেই আব্দুর রহিম মাহি (১৯) ও সাব্বির হোসেন রাতুল (১৯) নামের দুই হামলাকারীকে আটক করে পুলিশ। তবে বাকি হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
এ বিষয়ে ওয়ারী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাকারিয়া খান বলেন, আটক দুজনের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আটককৃতরা নিজেদের শিক্ষার্থী এবং যাত্রাবাড়ী এলাকার বাসিন্দা বলে দাবি করেছে। আহত রেদোয়ান ওয়ারীর এম দাস লেনে পরিবারের সঙ্গে থাকে এবং সম্প্রতি এসএসসি পাস করেছে।
এসআই আরও জানান, রেদোয়ানের মাথায় আঘাত করা হয়েছে। সে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। কী কারণে এই হামলা হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। আটককৃত এবং আহতের বক্তব্য ভিন্ন ভিন্ন হওয়ায় বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, সময়মতো পুলিশ ও জনতা মিলে ঘটনাটি প্রতিরোধ করতে পেরেছে, না হলে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারত।
ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ বলেন, হামলাকারীরা ও আহত ছেলেটি উভয়ই শিক্ষার্থী। তারা পূর্বপরিচিত ছিল কিনা বা ব্যক্তিগত কোনো শত্রুতা ছিল কিনা, সব বিষয় তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এবারের ঘটনার সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হলো জনতা নীরব না থেকে প্রতিরোধে এগিয়ে এসেছে।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আটক দুই যুবককে ঘিরে স্থানীয়রা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলছেন, “তোদের মতো লোকদের কারণেই দেশটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। তোদের আর ছাড় নেই।”
পুলিশ পলাতক হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং ঘটনার নেপথ্যের কারণ উদ্ঘাটনে তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
স্বাআলো/এস
