ঘুষ চাওয়ায় খুলনা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের হানা, ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার

খুলনা অফিস: খুলনা সদর সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তা ছদ্মবেশে সেবা নিতে গেলে তার কাছে সরাসরি ঘুষ দাবি করে বসে একাধিক দালাল। শুধু তাই নয়, সরকারি নির্ধারিত ফির চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ আদায়েরও চেষ্টা করা হয়। এই ঘটনার পরপরই দুদকের একটি দল কার্যালয়টিতে আকস্মিক অভিযান পরিচালনা করে।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুর আনুমানিক ১টা থেকে শুরু হয়ে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান চলে। অভিযানে দুদকের খুলনা জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা সাব-রেজিস্ট্রার তন্ময় কুমার মণ্ডল, অফিস সহকারী ফারুক হোসেনসহ বেশ কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই-বাছাই করেন।

অভিযানের বিষয়ে দুদকের সহকারী পরিচালক রাকিবুল ইসলাম জানান, তাদের একজন কর্মকর্তা ছদ্মবেশে সেবাগ্রহীতা সেজে গেলে দালালরা তার কাছে ঘুষ দাবি করে। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার সাথে সাথেই অভিযান শুরু করা হয়। অভিযানের এক পর্যায়ে কার্যালয়ের নকলনবিশ রাসেল শিকদারের ব্যাগ তল্লাশি করে নগদ ৭০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়। তবে তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এই টাকার বৈধ উৎস সম্পর্কে সন্তোষজনক কোনো ব্যাখ্যা বা তথ্য দিতে পারেননি।

অভিযানকালে আরো বেশ কিছু অসংগতি ধরা পড়ে। অফিসের মোহরার অরুণ কুমারের ব্যবহৃত বিকাশ অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক পরিমাণ আর্থিক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া আরেক নকলনবিশ মিতার ব্যাগ থেকে ব্যাংকে টাকা জমার রশিদ এবং এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ) সংক্রান্ত কাগজপত্র পাওয়া যায়, যার সঠিক উৎস সম্পর্কেও তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উদ্ধারকৃত অর্থ এবং অস্বাভাবিক লেনদেনের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্যপ্রমাণ দাখিলের জন্য সংশ্লিষ্টদের দুই দিনের সময় দেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি খুলনা জেলা রেজিস্টার এবং দুদক কমিশনকে আনুষ্ঠানিকভাবে অবহিত করা হয়েছে।

তারা আরো যোগ করেন, তদন্তে অনৈতিক লেনদেন এবং দুর্নীতির সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসাথে, দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য বন্ধে অভিযুক্ত নকলনবিশদের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়াও শুরু করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

অভিযান পরিচালনাকারী দলে আরো ছিলেন দুদকের খুলনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জাহিদ সজল, উপ-সহকারী পরিচালক আশিকুর রহমান ও শামীম রেজা।

স্বাআলো/এস