ভারত-পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলি, উত্তেজনা চরমে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা ক্রমশ বাড়ছে। কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক হামলার পর থেকে রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাত পর্যন্ত টানা চার রাতে নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর দুই দেশের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ এই গোলাগুলিতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি সোমবার (২৮ এপ্রিল) ভারতীয় সেনাবাহিনীর বিবৃতির বরাত দিয়ে জানায়, জম্মু ও কাশ্মীরের কুপওয়ারা ও পুঞ্চ জেলার নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর পাকিস্তানি সেনাঘাঁটি থেকে বিনা উসকানিতে ছোট অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানো হয়।

তারা আরো জানায়, ভারতীয় সেনারাও এর ‘উপযুক্ত জবাব’ দিয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, এই সাম্প্রতিক উত্তেজনার মধ্যে এবারই প্রথম পুঞ্চ সেক্টরে পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করল।

ভারতে এক হাজারের বেশি বাংলাদেশি আটক

তবে, ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো গোলাগুলির জন্য বরাবরের মতো পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বা দেশটির সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

উত্তেজনার সূত্রপাত মূলত গত ২২ এপ্রিল পেহেলগামে হওয়া এক সন্ত্রাসী হামলার পর। ভারত ওই হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে এবং এর জেরে বেশ কিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দিয়ে পাকিস্তানি নাগরিকদের ফেরত পাঠানো, সব ধরনের ভিসা বাতিল এবং ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু নদের পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, পেহেলগামের হামলায় জড়িতদের কঠিনতম শাস্তি পেতে হবে এবং এই ঘটনায় প্রতিটি ভারতীয়র ‘রক্ত ফুটছে’।

ভারত-পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর মধ্যে ফের গোলাগুলি

অন্যদিকে, পাকিস্তানও ভারতের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাকিস্তান সিমলা চুক্তি স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। এছাড়া, ইসলামাবাদ ভারতের জন্য পাকিস্তানের আকাশসীমা ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছে এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বন্ধের কথাও জানিয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ভারতের সিন্ধু চুক্তি স্থগিতের পদক্ষেপকে ‘যুদ্ধের ঘোষণা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, পাকিস্তান যেকোনো মূল্যে তার পানির অধিকার রক্ষা করবে।

সব মিলিয়ে, পেহেলগাম হামলার পরবর্তী সময়ে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্ক আবারো তলানিতে ঠেকেছে, যা নিয়ন্ত্রণরেখায় চলমান গোলাগুলি এবং কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

স্বাআলো/এস