খরা সহিষ্ণু ব্রি ধান-৯২ চাষে বাম্পার ফলন!

হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট: উত্তরাঞ্চলের কৃষকের কাছে নতুন জাতের ধান ব্রি-৯২ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ বছর খরা ও গরমে নতুন এই জাতের ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত নতুন এ জাত ধান উৎপাদনে বিপ্লব ঘটিয়েছে। নতুন জাতের ধান খরা সহিষ্ণু ও রোগবালাই প্রতিরোধক। এতে সেচ লাগে কম।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের তথ্যমতে, ইনস্টিটিউটের উদ্ভাবিত নতুন ধানের জাতগুলো হলো- ব্রি ধান ৮৮, ব্রি ধান ৮৯, ব্রি ধান ৯২, ব্রি ধান ৯৬ এবং বঙ্গবন্ধু ধান ১০০, ব্রি ধান ৭৫। তিন দশক আগে ব্রি ২৮ ও ব্রি ২৯ জাতের ধান উদ্ভাবন করে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট। জাত দুইটি চাষে কৃষকের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে দিয়েছিলো। দীর্ঘদিন ধরে মাঠে জাত দুইটি চাষ হওয়ায় রোগবালাই প্রতিরোধক্ষমতা কমেছে। তাই ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে কৃষক হয়ে ওঠেছিলো দিশাহারা। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট এবার অধিক ফলনশীল ১১টি জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলের কৃষি ও কৃষকের মধ্যে ছয়টি জাত জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

জাতগুলো হচ্ছে, ব্রি ৯২, ব্রি ৮৯, ব্রি ৭৫, ব্রি বঙ্গবন্ধু ১০০, ব্রি ৯৬ ও ব্রি ৮৮। এ বছর বৃহত্তর রংপুর অঞ্চলে মোট ১২ লাখ ৪৪ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে। ফলন হয়েছে বাম্পার। এখন প্রতিটি গ্রামে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ চলছে। এক মাস পর মোট উৎপাদন সম্পর্কে জানা যাবে। চলতি বোরো মৌসুমে এই নতুন জাতের ব্রি ধান ২৮ থেকে বিঘাপ্রতি ৩৩ মণ পর্যন্ত ফলন পেয়েছে কৃষক। ব্রি ২৮ জাতের ধানের বিকল্প হিসেবে কৃষক নতুন জাতের ধান চাষ করেছে।

রংপুর ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. রফিকুল হাসান জানান, ব্রি ২৮ জমি থেকে তুলে নেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে উচ্চ ফলনশীল জাতের ব্রি ৯২, ব্রি ৯৬, ব্রি ৭৫, ব্রি ৮৮, ব্রি বঙ্গবন্ধু ১০০-সহ উন্নত নতুন জাতের ধান মাঠে রোপিত হয়েছে। ফলনও হয়েছে বাম্পার।

রংপুর বিভাগে মোটি ১২ লাখ ৮৮ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষাবাদ হয়। মোট চাষাবাদের শতকরা ১৫ ভাগ জমিতে ব্রি ৭৯, শতকরা ১৫ ভাগ জমিতে ব্রি ৯২, ১৫ ভাগ জমিতে ব্রি ৭৫, ৫ ভাগ জমিতে ব্রি ৮৮ ও ব্রি ৯৬, হাইব্রিড ১৫ ভাগ জমিতে চাষ হয়েছে। ব্রি ২৮ রংপুর অঞ্চলে মাত্র ৫ ভাগ জমিতে চাষাবাদ হয়েছে।

লালমনিরহাট জেলায় ব্রি-৯২ জাতের উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান এবার বেশি চাষাবাদ হয়েছে। কারণ এই জাতটিতে পানি সেচ কম লাগে। এই জাতটি রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও পঞ্চগড় জেলায় খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

স্বাআলো/এস