বাংলাদেশের উন্নয়নে চীনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে: শি জিনপিং

ঢাকা অফিস: বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রযাত্রায় চীনের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, বাংলাদেশে আরো বেশি বিনিয়োগ করতে চায় চীন। অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, কমসুদে ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণ— এই চার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে চীন।

বুধবার (১০ জুলাই) বেইজিংয়ের ‘গ্রেট হল অব দ্য পিপল’-এ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানান শি জিনপিং। পরে বিষয়টি সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

চীনা প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, অনুদান, সুদমুক্ত ঋণ, কম-সুদে ঋণ এবং বাণিজ্যিক ঋণ— এই চার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে চীন। এ বিষয়ে দুই দেশের টেকনিক্যাল কমিটি যৌথভাবে কাজ করবে। চীন থেকে টেকনিক্যাল কমিটি বাংলাদেশে যাওয়ার বিষয়ে আলোচনা হবে।

বাংলাদেশকে ১ বিলিয়ন ডলার আর্থিক সহায়তা দেবে চীন

এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্ধৃতি দিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, কয়েক দশকে চীনের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। এ উন্নয়ন আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য অনুপ্রেরণার উৎস। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেলসহ বিভিন্ন আইকনিক স্থাপনা নির্মাণসহ বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে সহযোগিতার জন্য চীনা প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ দেন শেখ হাসিনা।

চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামের আনোয়ারায় ৮০০ একর জমি বরাদ্দ দেয়ার কথা উল্লেখ করে সেখানে চীনা উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ আহবান করেন তিনি। একই সঙ্গে বাংলাদেশের ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং আইটি ভিলেজগুলোতে চীনের বিনিয়োগ আহবান করেন প্রধানমন্ত্রী। বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, তারা বাংলাদেশ থেকে আরো পণ্য আমদানি করবেন। আমসহ অন্যান্য পণ্য আমদানির বিষয়ে আগ্রহ পুর্নব্যক্ত করেন শি জিনপিং।

চীনা কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ১৬ সমঝোতা স্মারক সই

আগামী বছর বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি। এটিকে সামনে রেখে দুই দেশের কৌশলগত সম্পর্ক, বিদ্যমান গভীর সম্পর্ককে দ্বিতীয় পর্যায়ে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন শি জিনপিং। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও দুই দেশের সম্পর্ককে আরো গভীরতর করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

রোহিঙ্গা ইস্যুটি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তোলার আগেই শি জিনপিং বলেন, আমি জানি মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। এটি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে বাংলাদেশকে সর্বত্র সহায়তা করবে চীন। মিয়ানমারের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে শি জিনপিং বলেন, মিয়ানমার সরকার এবং প্রয়োজনে আরাকান আর্মির সঙ্গেও তারা যোগাযোগ করে এ সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চীন।

শেখ হাসিনার চীন সফরে সতর্ক নজর ভারতের

শি জিনপিং বলেন, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না চীন। আমরাও চাই না কারো অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অন্য কেউ হস্তক্ষেপ করুক। আন্তর্জাতিক ফোরামে চীন ও বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে জানিয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা একসঙ্গে কাজ করবো এবং বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যেও একসঙ্গে কাজ করবো।

ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান ও তার প্রেসসচিব নাঈমুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

Popular

আপনার জন্য
Related

এক দল সরিয়ে আরেক দলকে ক্ষমতায় বসাতে গণ-অভ্যুত্থান হয়নি: নাহিদ

ঢাকা অফিস: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহবায়ক নাহিদ ইসলাম...

মেহজাবীনের চোখে ‘দাগি’: শুধু সিনেমা নয়, এক অনন্য অভিজ্ঞতা!

বিনোদন ডেস্ক: এবারের ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে দর্শকদের মন...

প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা

লিটন ঘোষ জয়, মাগুরা: প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা...

কাল সারাদেশে শিক্ষার্থীদের মহাসমাবেশ

ঢাকা অফিস: ছয় দফা দাবি আদায়ের আন্দোলনে থাকা কারিগরি...