রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার সব্দলপুর মৌজায় ৮২১ হাল দাগের ১১ শতক জমি রেকর্ড ও নকশা হওয়ার পরো ১১ বছর বেদখল থাকা জমি বাপ্পি দাস ও বাবলু দাস উদ্ধার করতে যেয়ে হামলার শিকার হয়েছেন। জমি দখলে বাধা দেয়ায় মামলা করা হয়েছে ইউপি সদস্য আবু বক্কর গাইনসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে। আসামিরা জামিনে মুক্তি পাওয়ায় হতাশ হয়েছেন বাদি।
কালিগঞ্জের চম্পাফুল ইউপি সদস্য আবু বক্কর গাইন জানান, আশাশুনি উপজেলার সব্দলপুর মৌজার এক একর সম্পত্তি ২০১২ সালের ২ জানুয়ারি একই এলাকার দেবদুলাল সরকারের কাছ থেকে সাবেক ৫০০/৫০১ দাগের এক একর জমি ৩৩ নং কোবালা দলিলমূলে কেনেন তিনি। পরবর্তীতে ৪৫ শতক জমি বিক্রি করে দেন তিনি। এরপর তিনি জানতে পারেন যে অস্তিত্ববিহীন সাবেক ৪৭৯ দাগ উল্লেখ করে হাল ৫২১ দাগের ১১ শতক জমি বর্তমান মাপজরিপে ৪০৪ নং খতিয়ান খুলে মা ললিতা দাসের নামে রেকর্ড করেছেন বাবলু দাস ও বাপ্পি দাস । এতে তার ৫৫ শতক জমির মধ্য থেকে ১১ শতক জমি কমে গেছে।
এ নিয়ে ২০২২ সালে তিনি সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা করলে দখল স্বত্ব তার বলে উল্লেখ করে যান সংশ্লিষ্ট সহকারি কমিশনার (ভ‚মি) এর জরিপকারক অমল কান্তি ঘোষ। তিনি ওই ১১ শতক জমি তার নামে রেকর্ড সংশোধনের জন্য গত ১৪ জুলাই আশাশুনি জ্যেষ্ঠ সহকারি জজ আদালতে মামলা (দেঃ ১৭০/২৪)করেছেন। মামলার খবর পেয়ে ললিতা দাসের ছেলে বাপ্পি দাস ও বাবলুদাস বহিরাগত সন্ত্রাসীদের নিয়ে ১৭ জুলাই সকালে তার দখলে থাকা ১১ শতক জমি দখল করতে গেল উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি হয়।
সাতক্ষীরায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল
একপর্যায়ে সংখ্যালঘু হওয়ার সুবাদে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বজিৎ কুমারকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে ২০ জুলাই তাকেসহ এলাকার ১১ জনের নামে থানায় একটি মামলা রেকর্ড করিয়েছেনহ বাবলু দাস। যদিও আদালতে হাজির হয়ে তারা সকল আসামী জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মুক্তি পাওয়ার খবর পেয়ে বাপ্পি দাস ও বাবলু দাস নতুন করে সংঘাত করার পায়তারা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আবু বক্কর গাইন।
শনিবার (৩ আগস্ট) সরেজমিনে সব্দলপুর গ্রামে গেলে সাহেব আলী, নজর আলী, কার্তিক সরকারসহ কয়েকজন জানান, রেকর্ড ও নকশা মালতি দাসের নামে হলেও ১১ বছরে বেশি সময় ধরে ওই জমি বক্কর গাইন দোকান বানিয়ে ব্যবসা করাসহ মাছ চাষ করে ভোগদখলে আছেন।
এ দিকে সব্দলপুর গ্রামের প্রসাদ চন্দ্র দাসের ছেলে বাবলু দাস জানান, সাবেক ৪৭৯ দাগের জমি বাদা কাটা সম্পত্তি। বাদা কাটা ওই জমি চাঁদখালির সুশীল সরকারের কাছ থেকে ১৯৮২ সালে কেনেন পরাণ মন্ডল। ১৯৯২ সালে পরাণ মন্ডলের কাছ থেকে তার মা ললিতা দাস রেজিষ্ট্রি দলিল মূলে মালিক হন। তারা দুই ভাই ওই জমির ওয়ারেশ।
সাতক্ষীরায় ৬৫ বছরের ভোগ দখলীয় জমি রাতের আঁধারে জবর দখলের চেষ্টা
রেকর্ড ও নকশা হওয়ার পরো আবু বক্কর গাইন তাদের জমি ছেড়ে দিচ্ছে না। উপরন্তু দখল নিয়ে কথা বলতে গেলে তাদেরকে পিটিয়ে জখম করা হয়েছে। আদালতে হাজির হওয়ার সাথে সাথে সকল আসামী জামিনে মুক্তি পাওয়ায় তারা নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন।
এ ব্যাপারে আশাশুনি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিশ্বজিৎ কুমার অধিকারী বলেন, সব্দলপুরের বাপ্পি দাসসহ তিনজনকে মারপিটের প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে মামলা রেকর্ড করা হয়। বাদল দাসের দায়েরকৃত মামলা অনুযায়ি ধারা বসিয়ে দেয়া হয়েছে। আদালত কোনো আসামীকে জামিনে মুক্তি দিলে পুলিশের কি করার আছে? ডাক্তারি চিকিৎসাপত্র অনুযায়ি মামলার পুলিশ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।
স্বাআলো/এস