খুলনা বিভাগ
চরম দুর্ভোগে হাজারো মানুষ

যশোর-খুলনা মহাসড়ক এখন মরণফাঁদ

নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক | July 9, 2025

বৃষ্টি হলে হাঁটু কাঁদা আর রোদ উঠলে ধুলা। যশোর-খুলনা মহাসড়কের অভয়নগর অংশের বেহাল দশার কারণে এমনই দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই পথে চলাচলকারী হাজারো মানুষকে। সড়কটি পাকা হলেও দেখে বোঝার উপায় নেই যে এটি পাকা রাস্তা। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের যানবাহন, যা এই সড়ককে কার্যত এক মরণফাঁদে পরিণত করেছে।

দেখা গেছে, যশোর-খুলনা মহাসড়কের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগ থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে এমন নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে সড়কটি চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্তে পানি জমে গেছে। ফলে যানবাহনের দীর্ঘ লাইন তৈরি হচ্ছে এবং ঘন্টার পর ঘন্টা যানজটে আটকে থাকতে হচ্ছে চালক ও যাত্রীদের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইটভাটার মালিক ও বালি-মাটি ব্যবসায়ীদের লাইসেন্সবিহীন ট্রাক্টর, ডাম্পার ট্রাক ও ট্রলি থেকে নিয়মিত মাটি ও বালি রাস্তার উপর পড়ে এই বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এই মাটি রোদের সময় শুকিয়ে ধুলায় পরিণত হয় এবং বৃষ্টির সময় পিচ্ছিল কাঁদায় একাকার হয়ে যায়।

এই সড়কের বেহাল দশার কারণে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। বেশ কয়েকজন ট্রাকচালক জানান, প্রায় প্রতিদিনই ২/৩টি গাড়ি সড়কে উল্টে যায়। জাহিদুল ইসলাম নামের একজন ট্রাকচালক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তিনি মঙ্গলবার ভোর তিনটার সময় এসে প্রায় তেরো ঘন্টা অপেক্ষা করেও মাত্র এক কিলোমিটার রাস্তা পার হতে পারেননি। তিনি এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের দাবি জানান।

যশোরে মহাসড়কে পিচের বদলে ইটের সলিং!

সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মোটরসাইকেল ও ছোট ছোট গাড়ির চালকরা। ভেজা কাঁদা মাটিতে পিচ্ছিল হয়ে থাকা রাস্তায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের। হেঁটে পথ পাড়ি দেওয়া পথচারীদেরও পড়তে হচ্ছে চরম বিড়ম্বনায়। মেহেদি নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, ধুলায় কিছুই দেখা যায় না, আর এখন কাঁদার কারণে চলাচলে অনেক সমস্যা হচ্ছে। পরিবহন চালক রমজান আলী জানান, বছর জুড়েই এই রাস্তায় দুর্ভোগ থাকে, তবে বর্ষায় কাঁদা আর বর্ষার পর ধুলায় পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়।

এক পরিবহন যাত্রী বলেন, যশোর-খুলনা মহাসড়কের অভয়নগর অংশ এখন যেনো মরণফাঁদ। চেঙ্গুটিয়া উড়োতলা নামক স্থানে সড়কের বেহাল দশা ও যানজটের কারণে তাকে দুই ঘন্টা গাড়ির ভেতর বসে থাকতে হয়েছে। তিনি প্রতিদিনের এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তির দাবি জানান।

নওয়াপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, বৃষ্টির কারণে এবং কয়েকটি গাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় সড়কে যান চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। হাইওয়ে পুলিশের একটি দল ২৪ ঘন্টাই মহাসড়কে কাজ করছে এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ জানান, রাস্তার ঠিকাদারকে ডেকে কথা বলা হয়েছে। ভারী বর্ষণের কারণে কাজে বিলম্ব হলেও দ্রুতই কাজ শুরু হবে এবং সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। তবে স্থানীয়রা দ্রুত স্থায়ী সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo