দেশে প্রতি ৫ জনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর)। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও জনসচেতনতার লক্ষ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে।

১৯৯১ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের যৌথ উদ্যোগে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হবে।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের কারণ হচ্ছে, এ দিন ফ্রেডরিক ব্যান্টিং জন্মগ্রহণ করেন। যিনি সহযোগী চার্লস বেল্টের সঙ্গে অধ্যাপক ম্যাকয়িডের গবেষণাগারে ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণের মহৌষধ ইনসুলিন আবিষ্কার করেন।

বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ, চিকিৎসা ও নিয়ন্ত্রণ রাখার ব্যবস্থা সম্পর্কে গণসচেতনতা বাড়ানো।

উন্নত দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বংশগত কারণ ছাড়াও নগরায়ন ও পরিবর্তিত জীবনধারণের কারণেই দেশে ডায়াবেটিক রোগীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে।

সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ ডায়াবেটিস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ডা. বিশ্বজিৎ ভৌমিক জানান, বর্তমানে দেশে এক কোটি ৩০ লাখ লোকের ডায়াবেটিস রয়েছে। তবে এই সংখ্যা আরো অনেক বেশি। ২০২২ সালে ডায়াবেটিস টেস্ট সার্ভে থেকে জানা যায়, দেশে প্রতি দশ জনে একজনের ডায়াবেটিস রয়েছে। ২০২১-২২ সালে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস সমিতির পক্ষ থেকে এক লাখ লোকের ওপর করা একটি স্টাডি থেকে জানা যায়, দেশে পাঁচজনে একজন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। ১৫ থেকে ২০ বছর বয়সীদের ডায়াবেটিসে আক্রান্তের চার দশমিক চার শতাংশ। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ২৫ দশমিক সাত শতাংশ। অর্থাৎ প্রতি চার জনে একজন গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

তিনি আরো বলেন, দেখা যাচ্ছে ১৯ থেকে ২১ সালের মধ্যে প্রতি দুই বছরে ৫৬ শতাংশ হারে ডায়াবেটিস বাড়ছে এবং সমসংখ্যক লোকের প্রি-ডায়াবেটিস রয়েছে। আমাদের ধারণা, এভাবে চলতে থাকলে ১৫ থেকে ২০ বছরে এই সংখ্যা ডাবল হয়ে যাবে এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর ব্যাপক চাপ তৈরি করবে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বিষয়ে তিনি বলেন, শিশু বয়সে স্কুল কলেজ থেকেই মূলত ডায়াবেটিস সমস্যা শুরু হচ্ছে। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় ডায়াবেটিস প্রতিরোধের বিষয়বস্তু অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। রাষ্ট্রকে সব কার্যক্রমের সঙ্গে এটাকে সমন্বয় করতে হবে। রাষ্ট্রীয় ও পারিবারিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে সবকিছুতে এটাকে গুরুত্ব দিতে হবে। হাঁটাহাঁটির বিষয়ে সবাইকে উৎসাহিত এবং বাধ্য করতে হবে। যেমন জাপানে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা অফিস থেকে প্রায় এক মাইল দূরে। ফলে তাদের অফিসে আসার সময় এক মাইল এবং যাওয়ার সময় এক মাইল হাঁটতেই হয়। নগরে হাঁটার রাস্তা ও ফুটপাত রাখতে হবে। সাইকেল চালানোয় উৎসাহিত করতে হবে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

অপহৃত ব্যবসায়ী শিবু বণিককে উদ্ধার, আটক ৫

পটুয়াখালীর বাউফলের কালাইয়া বন্দরে ডাকাতির পর অপহৃত বিশিষ্ট ব্যবসায়ী...

চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন প্রবীর মিত্র

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারজয়ী অভিনেতা প্রবীর মিত্র ওরফে হাসান ইমামের...

চাঁদাবাজির অডিও ক্লিপ ফাঁস, যুবদল নেতা বহিষ্কার

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: চাঁদাবাজির অডিও ক্লিপ ফাঁস হওয়ায় নোয়াখালীর...

এনআইডি সেবা নিশ্চিতে কর্মকর্তাদের যে নির্দেশনা দিলো কমিশন

জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে এবার...