নির্বাচনের রোডম্যাপ জানতে আজ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বসছে বিএনপি

ঢাকা অফিস: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিতব্য এই বৈঠকে দলটি জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট পথনকশা এবং নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা সম্পর্কে স্পষ্ট ঘোষণা চাইবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল এই বৈঠকে অংশ নেবে। মঙ্গলবার রাতে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির সভায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের আলোচ্যসূচি চূড়ান্ত করা হয়।

দলীয় সূত্রমতে, বিএনপি নেতারা প্রধান উপদেষ্টার কাছে নির্বাচনের একটি সুস্পষ্ট রোডম্যাপ দাবি করবেন এবং কবে নাগাদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে সে বিষয়ে জানতে চাইবেন। উপদেষ্টাদের সাম্প্রতিক বিভিন্ন বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা ও অনিশ্চয়তা দূর করতে চায় দলটি। বিশেষ করে, প্রধান উপদেষ্টা আগে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের কথা বললেও সম্প্রতি আগামী বছরের জুন পর্যন্ত সময়সীমার কথা উল্লেখ করায় বিএনপি নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। দলটি ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে এবং এর ব্যত্যয়কে বিলম্বিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে।

বিএনপির নেতারা মনে করছেন, নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি, যেমন সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ এবং জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশনের অধীনে ফিরিয়ে আনার মতো বিষয়ে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। এছাড়া, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে পূর্ববর্তী সরকারের সুবিধাভোগীদের অবস্থান এবং বৈষম্যের শিকার কর্মকর্তাদের পদায়ন না হওয়ার বিষয়গুলোও বৈঠকে তুলে ধরা হবে বলে জানা গেছে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ডিসেম্বরে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর ব্যতিক্রম কাম্য নয়। উপদেষ্টাদের বক্তব্যে ও সামাজিক মাধ্যমের পোস্টে নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রয়াস দেখা যাচ্ছে। বৈঠকে আমরা নির্বাচনের রোডম্যাপ কবে দেওয়া হবে তা জানতে চাইবো।

এদিকে, নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি আগামী তিন মাসের জন্য সাংগঠনিক কর্মসূচি প্রণয়নের পরিকল্পনা করেছে। এর মধ্যে তৃণমূল থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধাপে সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা ও মিছিলের মতো কর্মসূচি থাকতে পারে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আজকের বৈঠকের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হতে পারে।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট পূর্ববর্তী সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়। বিভিন্ন খাতে সংস্কার আনা এই সরকারের অন্যতম লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর প্রতিবেদনের ভিত্তিতে একটি ‘জুলাই সনদ’ তৈরির জন্য জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। এই সনদের ভিত্তিতেই আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের পরদিন, বৃহস্পতিবার, সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গেও বিএনপির একটি বৈঠক নির্ধারিত রয়েছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

Popular

আপনার জন্য
Related

শেখ রেহানার স্বামী-দেবরসহ ৮ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা অফিস: রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের নামে বিপুল অর্থ...

বজ্রপাতের সময় কী করবেন, কী করবেন না

বৈশাখ মাস শুরু হতেই বাংলাদেশে বেড়েছে বৃষ্টি ও বজ্রপাতের...

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সব পলিটেকনিক

ঢাকা অফিস: ছয় দফা দাবি পূরণের সুস্পষ্ট রূপরেখা না...

মাগুরায় শিশু ধর্ষণ ও হত্যা: তৃতীয় দিনে ১০ জনের সাক্ষ্য

লিটন ঘোষ জয়, মাগুরা: দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টিকারী মাগুরার শিশু...