লিটন ঘোষ জয়, মাগুরা: মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মান্দার বাড়িয়া গ্রামের আশরাফিয়া জামে মসজিদের নির্মাণ কাজের সাত লাখের বেশি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র। এ ঘটনায় মহম্মদপুর থানায় সম্প্রতি চারজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। যাদের মধ্যে দুইজন গ্রেফতার হয়ে একজন জেলহাজতে গেছে রবিবার। অন্যজন জামিনে মুক্ত হয়েছেন।
মামলার বাদী মসজিদ কমিটির সদস্য শরীফ ফরিদ লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার মান্দার বাড়িয়া গ্রামের পশ্চিমপাড়ায় ২০১৬ সালে আশরাফিয়া জামে মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নিমার্ণ কাজ শুরুর পর থেকেই একই এলাকার শরীফ আলিমুজ্জামানসহ অন্যরা বিভিন্নভাবে মসজিদের নিমার্ণ কাজের বাধা দিয়ে আসছিলো। এরই এক পর্যায়ে মসজিদ নির্মাণ কাজের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান আকিজ কোম্পানি ৩০ লাখ টাকা অনুদান মঞ্জুর করে। ওই ৩০ লাখ টাকা অনুদানের মধ্য হতে মসজিদ নির্মাণ কাজের জন্য সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা মসজিদের নামে খোলা হিসাব নম্বর ০১০০০৮১৫৭২১৩০ জনতা ব্যাংক মহম্মদপুর শাখায় রাখা হয়। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে মসজিদ নির্মাণ বাবদ অনুদান আসে। গত ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর শরীফ আলিমুজ্জামান বিকালে গোলাম রব্বানী, মোতাহার মোল্যা, কাজল মোল্যাসহ আরো অনেকের সামনে উপস্থিত হয়ে বাদীর কাছে মসজিদের নামে আসা অনুদানের টাকার মধ্য হয়ে এক তৃতীয়াংশ টাকা চাঁদা দাবি করে। এছাড়া প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলে যে, টাকা না দিলে মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ করাসহ মসজিদ কমিটির সদস্যদের বিপদে ফেলবে। এরই এক পর্যায়ে গত ১৬ এপ্রিল ২০২৪ তারিখে বাদীসহ অন্য সদস্যরা ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে জানতে পারেন ওই হিসাব নম্বরে কোনো টাকা নেই।
বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নিয়ে তারা জানতে পারেন, আসামি শরীফ আলিমুজ্জামান (৪৫), কাজী সাইদুর রহমান (৬০), ইমাম শরীফ (৬২) ও জামাল মোল্যা (৩৮) আসামিরাসহ অজ্ঞাত আরো অনেকে মসজিদের নামে একটি গোপন কমিটি করেছে। পরবর্তীতে ওই কমিটির মাধ্যমে অসাধু উপায়ে মসজিদের নামে থাকা জনতা ব্যাংক মহম্মদপুর শাখা থেকে নতুন একটি চেক বই সংগ্রহ করে তারা। গত ২০২৩ সালে ২৪ জানুয়ারি হতে ২০২৩ সালে আগস্টের ৩১ তারিখ পর্যন্ত বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে অভিযুক্ত শরীফ আলিমুজ্জামান এবং কাজী সাইদুর রহমান নতুন চেক বই ব্যবহার করে সজিদের হিসাব নম্বর থেকে মোট সাত লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে।
এবিষয়ে মহম্মদপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ বোরহান-উল ইসলাম বলেন, ব্যাংক থেকে মসজিদের নির্মাণ কাজের টাকা উত্তোলনের ঘটনায় ফরিদ শরীফের দায়ের করা মামলা ইতিমধ্যে শরীফ আলিমুজ্জামান ও ইমাম শরীফ নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে সপোর্দ করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতার অভিযান চলছে।
স্বাআলো/এস