সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট, পাঠানো হচ্ছে ২০০ টন খাদ্যপণ্য

ঢাকা অফিস: মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সংঘাতের জেরে কক্সবাজারের টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে এক সপ্তাহ ধরে জাহাজ চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর ফলে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সংকটে পড়েছেন দ্বীপটির ১০ হাজার বাসিন্দা।

সংকট মোকাবিলায় আজ শুক্রবার (১৪ জুন) কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজে ২০০ মেট্রিক টন খাদ্যপণ্য পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে টেকনাফে আটকে পড়া দেড়শ যাত্রীও ফিরছেন সেখানে।

ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম: সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ, শতাধিক পর্যটক আটকা

জানা গেছে, আজ শুক্রবার (১৪ জুন) কক্সবাজার শহরের বিআইডব্লিউটিএ ঘাটে একের পর এক ট্রাক ভিড়তে দেখা যায়। এসব ট্রাকে এসেছে চাল, ডাল ও তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী। প্রশাসনের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ‘এমভি বারো আউলিয়া’ নামে একটি জাহাজে খাদ্যপণ্য পাঠানো হয় দ্বীপটিতে। সন্ধ্যার দিকে এসব পণ্যসামগ্রী দ্বীপে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, প্রশাসনের উদ্যোগে জাহাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাই চাল ও ডাল থেকে শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কক্সবাজার থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিন নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এখন আর দ্বীপে খাদ্যসংকট থাকবে না। খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি দ্বীপে ফিরে যাচ্ছে টেকনাফে আটকেপড়া অনেক বাসিন্দা। নিরাপদে দ্বীপে ফিরে যেতে ব্যবস্থা করায় খুশি তারা। তবে তাদের দাবি, জাহাজটি যেন মিয়ানমারের সংঘাত বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত চলাচল করে।

আবারো টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ, আটকা ৩০০ পর্যটক

প্রশাসন ও জাহাজ কর্তৃপক্ষ বলছে, জাহাজে পাঠানো খাদ্য দিয়ে আগামী একমাস দ্বীপের বাসিন্দারা চলতে পারবে। আর প্রশাসন চাইলে জাহাজটি কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন চলাচল করবে। আর এমভি বারো আউলিয়া জাহাজের পরিচালক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, প্রশাসন যতদিন চাইবে, ততদিনই কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটে জাহাজ চলাচল করবে। এ জাহাজের ১২ মাস চলাচলের সক্ষমতা রয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ ধরে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় মিয়ানমার সীমান্ত থেকে বাংলাদেশি ট্রলার ও স্পিডবোট লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে। এ কারণে সেন্টমার্টিন নৌরুটে জাহাজসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে দ্বীপটিতে খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। অবশেষে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় কক্সবাজার থেকে খাদ্যপণ্য নিয়ে জাহাজ আসছে। একই সঙ্গে কক্সবাজারে আটকে পড়া বাসিন্দারাও ফিরছেন।

সিকিমে ভারী বর্ষণ-ভূমিধসে নিহত ৬, আটকা ১৫০০ পর্যটক

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইনের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরকান আর্মির মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের আঁচ লাগছে এপারের বাংলাদেশের সীমান্তের গ্রামগুলোতে। বাংলাদেশি ট্রলারগুলোকে সীমান্তের ওপার থেকে গুলি করা হচ্ছে। যদিও কারা গুলি করছে, তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ইয়ামিন হোসেন বলেন, আপাতত বিশেষ ব্যবস্থায় খাদ্যপণ্য পাঠানো হয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে। এসব পণ্য আগামী একমাস চলবে। পরে যদি প্রয়োজন পড়ে তাহলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

Popular

আপনার জন্য
Related

শার্শার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান তোতা গ্রেফতার

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরের শার্শা উপজেলার ১০ নম্বর ইউনিয়ন পরিষদের...

আমরা যুদ্ধাবস্থায় আছি: প্রধান উপদেষ্টা

নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ষড়যন্ত্রও ততই তীব্র হচ্ছে উল্লেখ...

যশোরে সন্তানকে জিম্মি করে মাকে ধর্ষণচেষ্টা, যুবক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে হাসান নামের...

নোয়াখালীতে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার ও ইফতার সামগ্রী বিতরণ

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: জেলার কবিরহাটে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক...