‘প্রবীণদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা চাই’

সম্পাদকীয়: মাকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে যশোরের এক আইনজীবীর বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে মঙ্গলবার (২৫ জুন) ভুক্তভোগী সদর উপজেলার ফতেপুর গ্রামের ওই মা তার ছেলের বিরুদ্ধে জেলা আইনজীবী সমিতিতে অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়টি আমলে নিয়েছে জেলা আইনজীবী সমিতি।

আইনজীবীর মায়ের অভিযোগ, তার স্বামী বেঁচে থাকা অবস্থায় তাকে এবং তার স্বামীকে মারধর ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছিলো । কখনোই সে ভরণপোষণ দেয়নি। বাবার মৃত্যুর পর ছেলে প্রতিনিয়ত মাকে হয়রানি করে আসছে। খবর শুনে তার মেয়ে ও জামাই বাড়িতে আসলে তাদেরকে মারধর করে তাড়িয়ে দেয় ওই আইনজীবী ।

সর্বশেষ গত ২৩ জুন আইনজীবী তার মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে একবস্ত্রে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। অস্তিত্বহীন অবস্থা থেকে মহান সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি কৌশলে যে মা-বাবার মাধ্যমে সন্তানটি পৃথিবীর আলোর মুখ চোখে দেখে এবং জীবনের সব কিছুর বিনিময়ে যে সন্তানটিকে মা-বাবা লালন পালন করে তোলেন সেই মা- বাবাকে পড়ন্ত জীবনে সন্তানের হাতে নিগৃহীত হতে হয় এর চেয়ে পাপের খবর আর আছে বলে মনে হয় না। হাল আমলে এমন ধরনের অমানবিক খবর প্রায় গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে। মা- বাবা সন্তানের কাছে কত বড় বোঝা হয়েছে যে তাদেরকে একমুঠো ভাত দিতে সন্তানরা বোঝা মনে করছে। এসব কথা শোনাও বোধ হয় পাপ। অনুভুতিপ্রবণ মানুষের চোখে পানি না এসে পারে না। বাড়ির ইতর প্রাণীটার ওপরো এমন আচরণ কেউ করে না। বৃদ্ধ বাবা সাহেব আলীর ভাগ্যে এই অমানবিক ঘটনাটি ঘটেছে।

মানুষ আশরাফুল মখলুকাত অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। যারা মানুষের সমাজে বাস করেও পশুর মতো আচরণ করে তাদের এ সমাজে বাস করার কোনো অধিকার থাকা উচিত নয়। বনই তাদের জন্য উপযুক্ত স্থান। মা-বাবার দোয়া ছাড়া ইহকাল পরকাল কোনো কালেই সন্তানের কল্যাণের আশা নেই। মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেস্ত। ধর্মের এই মর্মবাণী কি তাদের কানে কোনো দিন পৌছায়নি? দিন দিন পারিবারিক বন্ধন যে ভাবে শিথিল হচ্ছে তাতে এক দিন দেখা যাবে প্রবীণদের দেখার বা সেবা-যত্নের কেউ নেই। এ ক্ষেত্রে সরকারি উদ্যোগে প্রবীণদের নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা উচিত বলে আমরা মনে।

স্বাআলো/এস