কোরবানির গুরুত্ব ও ফজিলত

কুরবুন বা কোরবানি অর্থ আত্মত্যাগ, উৎসর্গ বা বিসর্জন ইত্যাদি। ইসলামি শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে মহান আল্লাহর নামে কোনো কিছু উৎসর্গ করার নামই কোরবানি। প্রচলিত অর্থে কোরবানি হলো পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে জিলহজ মাসের ১০ থেকে ১২ তারিখের মধ্যে মহান রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ব্যক্তির নির্দিষ্ট জানোয়ার জবেহ করা।

সূরা হাজ-এ মহান রাব্বুল আলামীন ঘোষণা করেন, আমি প্রত্যেক জাতির ওপর কোরবানির নিয়ম করেছি যাতে তারা চুতষ্পদ জন্তু জবেহ করে এবং আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। সেই সাথে সূরা কাওসারে বলা হয়, তোমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে সালাত আদায় করো এবং কোরবানি করো।

কোরবানির উদ্দেশ্য

কোরবানির মুখ্য উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন করা। তাকওয়ার মাধ্যমেই আত্মা পরিশুদ্ধ হয়। সূরা আল-আনআমের ১৬২ নম্বর আয়াতে আল্লাহ’তায়ালা বলেন, বলো, আমার সালাত, আমার হজ ও কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মরণ সবই বিশ্বজগতের প্রতিপালক আল্লাহর উদ্দেশ্যে। কোরবানি আমাদের শিক্ষা দেয় আল্লাহর প্রেমে পূর্ণ তাকওয়া নিয়ে কোরবানি করতে হবে। জিলহজ মাসের দশ, এগারো, বারো তারিখ মুসলিম বিশ্বের সর্বত্র এ কোরবানির উৎসব বা ঈদুল আজহা শুধু প্রতীকী অনুষ্ঠান মাত্র নয়। মনের গভীরে আল্লাহর প্রতি ভালোবাসা ও তাকওয়া নিয়ে প্রিয় বস্তু তাঁর নামে উৎসর্গ করাই এর উদ্দেশ্য। আল্লাহর কাছে কোরবানির পশুর গোশত ও রক্ত কিছুই পৌঁছায় না। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহকে রাজি-খুশি করা, তাঁর সন্তুষ্টি অর্জনই হলো মুখ্য উদ্দেশ্য। আল্লাহ বলেন, আমার কাছে এগুলোর গোশত ও রক্ত পৌঁছে না, পৌঁছে শুধু তোমাদের মনের তাকওয়া।

ফজিলত ও গুরুত্ব

কোরবানির দিন কোরবানি করা মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে সবচেয়ে বেশি পছন্দের। কোরবানির পশুর রক্ত ভূমিতে পতিত হওয়ার আগেই আল্লাহ’তালার দরবারে কবুল হয়ে যায়। নবী করীম (সাঃ) বলেন, কোরবানির পশুর যত পশম থাকে তার পরিবর্তে ৩৩টি পুণ্য লেখা হয়ে থাকে। হজরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত এক হাদীস থেকে জানা যায় নবী করীম (সাঃ) বলেন, কোরবানির দিন রক্ত প্রবাহিত করার চেয়ে প্রিয় কোনো আমল আল্লাহর কাছে নেই। কোরবানিকারী কিয়ামতের দিন জবেহকৃত পশুর লোম, শিং, ক্ষুর, পশম ইত্যাদি নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হবে। সেইসাথে কোরবানির গুরুত্ব সম্পর্কে হজরত আবু হুরাইরা (রাঃ) বর্ণিত এক হাদীস থেকে জানা যায় নবী করীম (সাঃ) বলেন, যে ব্যক্তির সামর্থ থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করল না, সে যেন আমাদের ঈদগাহের নিকটবর্তী না হয়।

স্বাআলো/এস