ভারত বিশ্বকাপের যেসব বিষয় জানা খুবই জরুরি

আর মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষার পরই পর্দা উঠবে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসরের।

আগামী বৃহস্পতিবার (৫ অক্টোবর) থেকে টানা ৪৫ দিন চার-ছক্কায় বুঁদ হয়ে থাকার সুযোগ ক্রিকেটপ্রেমীদের।

ইতোমধ্যে সকলেই তাদের প্রিয় দলের শক্তিমত্তা, দুর্বলতা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছে। তবে এর বাইরেও এমন কিছু বিষয় রয়েছে যা হয়তো আপনার নজর এড়িয়ে গেছে।

জেনে নিন ওয়ানডে বিশ্বকাপের কিছু জরুরি বিষয়-

এককভাবে ভারতে প্রথম আসর ও সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম

২০১৯ সালের পর মাঝে ৪ বছর বিরতি দিয়ে আবারো মাঠে গড়াতে যাচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপ। আর এবারের আসরটি বসছে উপমহাদেশের দেশ ভারতের। এবারই প্রথম এককভাবে ভারতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের আসর। এর আগেই ভারতে বসেছে ক্রিকেটের মহা আসর। তবে সেগুলোতে ছিলো সহআয়োজক দেশও।

১৯৮৭ সালে পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে প্রথমবার ভারত বিশ্বকাপ আয়োজকের তালিকায় নাম লেখায়। এরপর ১৯৯৬ সালে ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা যৌথভাবে বিশ্বকাপ আয়োজন করে। ২০১১ সালে প্রথমবার আয়োজকের খাতায় নাম লেখায় বাংলাদেশ। এবার পাকিস্তানকে বাদ দিয়ে বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কায়।

২০১১ সালের এক যুগ পর ও বিশ্বকাপ শুরুর ৪৮ বছর পর এসে এককভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পেলো ভারত। এবারের আসরটি দেশটির ১০টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। ভিন্ন ভাষা, সংস্কৃতি, আবহাওয়া ও বৈচিত্র্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার দারুণ সুযোগ করে দিচ্ছে এবারের বিশ্বকাপ।

তবে বিশ্বকাপের সব আলো কেড়ে নিয়েছে গুজরাটের আহমেদাবাদে অবস্থিত নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়াম। এক লাখ ৩২ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতা সম্পন্ন বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই ক্রিকেট স্টেডিয়ামে উদ্বোধনী ও ফাইনালসহ মোট পাঁচটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বকাপকে টার্গেট করেই এর সংস্কার করে ভারত। এর আগে স্টেডিয়ামটি নাম ছিলো সরদার বল্লভভাই প্যাটেল স্টেডিয়াম। নতুন করে স্টেডিয়ামটি ২০২১ সালে উদ্ভোধনের পর বর্তমান নাম রাখা হয়। গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এই মাঠ অনেকের কাছে মোতেরা স্টেডিয়াম হিসেবেও পরিচিত।

যেভাবে বিশ্বকাপের টিকিট পেলো ১০ দল

আয়োজক দেশ হিসেবে ভারত অটো চয়েস হিসেবে বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। এরপর ওয়ানডে সুপার লিগে খেলা ১৩ দলের ভেতর শীর্ষে থাকা ৭টি দল জায়গা করে নেয় মূল পর্বে।

সুপার লিগ থেকে বাদ যাওয়া পাঁচ দলকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয় বাছাইপর্ব। সেখান থেকে ফাইনালিস্ট দুই দল নিশ্চিত করে মূল পর্বের টিকিট।

এই দশ দলকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে ভারত বিশ্বকাপ।

নতুন দশ অধিনায়ক

বিশ্বকাপ ইতিহাসে এবারই প্রথম ঘটবে এমন ঘটনা। যা আর কখনো এমন ঘটেনি। ১০টি দল যখন তাদের প্রথম ম্যাচে টস করবে তখন প্রতিটি দলেই দেখা মিলবে নতুন অধিনায়কের। অর্থাৎ ২০১৯ আসরে যারা দলগুলোকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন কেউই থাকছেন না অন্তত এবারে আসরের প্রথম ম্যাচে।

তবে দশ দলের মধ্যে একমাত্র ব্যতিক্রম নিউজিল্যান্ড। কেননা তিনি টানা ২য় বিশ্বআসরে দলকে নেতৃত্ব দিতে এসেছেন কেন উইলিয়ামসন। কিন্তু দেশটির ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে ইনজুরির জন্য প্রথম ম্যাচে নামবেন না তিনি। সে জায়গায় অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করবেন উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান টম লাথাম। এছাড়া বাকি ৯ দলেই নতুন সব অধিনায়ককে দেখা যাবে।

৫ অক্টোবর বিশ্বকাপের উদ্ভোধনী ম্যাচে মাঠে নামবে নিউজিল্যান্ড ও ইংল্যান্ড। গতবার ইংলিশদের হয়ে অধিনায়ক ছিলেন ইয়ান মরগ্যান এবার তার জায়গায় দায়িত্বপ্রাপ্ত জস বাটলার। গতবার কিউই অধিনায়ক ছিলেন কেন উইলিয়ামসন এবারো তিনি অধিনায়ক। তবে তাকে দেখা যাবে না উদ্বোধনী ম্যাচে।

বিশ্বকাপের ২য় ম্যাচে মুখোমুখি পাকিস্তান-নেদারল্যান্ডস। ২০১৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের নেতৃত্বে ছিলেন সরফরাজ আহমেদ। এবার তার জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন বাবর আজম। যিনি বিশ্বের এক নাম্বার ব্যাটারও। অন্যদিকে দুই আসর পর আবারো বিশ্বমঞ্চে নেদারল্যান্ডস। স্বাভাবিকভাবে তাদের অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডসেরও প্রথম বিশ্বকাপ এটি।

৭ অক্টোবর মাঠে নামবে বাংলাদেশ। মাশরাফির পর দলটির নেতৃত্বভার এখন সাকিবের কাঁধে। তাদের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানেও দেখা মিলবে নতুন নেতৃত্বের। ২০১৯ সালে দায়িত্বে থাকা গুলবাদন নাইব এবার দলেই নেই। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছে হাশমতউল্লাহ শহিদী।

একই দিন নিজেদের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কা। দু’দলেই থাকছেন নতুন অধিনায়ক। দক্ষিণ আফ্রিকায় ফাফ ডু প্লেসির জায়গায় এসেছে টেম্বা বাভুমা, আর শ্রীলঙ্কার দিমুথ করুনারত্নের জায়গা নিয়েছেন দাসুন শানাকা।

৮ অক্টোবর বিশ্বকাপ যাত্রা শুরু করবে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। গতবার ভারতকে নেতৃত্ব দেয়া বিরাট কোহলির জায়গায় এবার নেতৃত্ব দেবেন রোহিত শর্মা। আর কোহলিকে দেখা যাবে শুধুই ব্যাটার হিসেবে। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার সেবারের অধিনায়ক ফিঞ্চ চলে গেছেন অবসরে। তার জায়গায় টস করবেন পেস বোলার প্যাট কামিন্স। কামিন্স যখন টস করবেন তখন কমেন্ট্রি বক্সে থাকবেন সাবেক অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ।

নতুন নতুন নিয়ম

আইসিসি ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ‘মানকাড’ কে বৈধতা দিয়েছে। এরপর থেকে এটি বৈধ হিসেবেই গণ্য হয়ে আসছে। তবে বিশ্বআসরে এ নিয়মটি হবে প্রথম। আগে যেটিকে ব্যাটসম্যানরা ‘আনফেয়ার’ হিসেবে দেখত। বোলার এক্ষেত্রে আউট করলে তা স্পিরিট অফ ক্রিকেটের বিপক্ষে যায় কি না সে নিয়েও বিস্তর বিতর্ক হয়েছে।

তবে এবারের বিশ্বকাপে হয়তো এমন দৃশ্য প্রথমবারের মতো দেখা যেতে পারে। আর স্বাগতিক ভারত বরাবরই এরকম আউটের পক্ষে কথা বলে এসেছে, যেটা ‘মানকাড’ আউট হিসেবে পরিচিত।

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ফ্রি-হিটে বোল্ড হয়েও দৌড়ে রান নেন বিরাট কোহলি। প্রচুর তর্ক-বিতর্কের পর এ বছর সেটিকে নিয়মে অন্তুর্ভুক্ত করে আইসিসি। অর্থাৎ ফ্রি হিটের সময় যদি ব্যাটারের স্টাম্প ভেঙে যায় তবুও তিনি দৌড়ে রান নিতে পারবেন যা অতিরিক্ত খাতায় যোগ হবে।

এছাড়া টি-টোয়েন্টির মতো ওয়ানডেতেও এবার ফিল্ডিং দলকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে আইসিসি। সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যেই শেষ করতে হবে ৫০ ওভার বোলিং। অর্থাৎ প্রতি ঘণ্টায় ১৪ ওভারের একটু বেশি। এ সময়ের মধ্যে ওভার শেষ করতে ব্যর্থ হলে বোলিংয়ের শেষদিকে অতিরিক্ত সময়ের জন্য মাঠে ফিল্ডার রাখার ক্ষেত্রে জরিমানা দিতে হবে তাদের। অর্থাৎ শেষ ১০ ওভারে পাঁচজনের জায়গায় বাউন্ডারিতে চারজন ফিল্ডার রাখা যাবে।

তবে নতুন নিয়মের ক্ষেত্রে ভারতীয় গণমাধ্যম টাইমস অফ ইন্ডিয়ার একটা প্রতিবেদন নজর কাড়ে। যেখানে দাবি করা হয় আইসিসি বিশ্বকাপের পিচ ও বাউন্ডারির ব্যাপারে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে।

যেহেতু ভারতে এ সময় শিশির একটা বড় ফ্যাক্টর হতে যাচ্ছে সেহেতু, উইকেটে একটা নির্দিষ্ট মাত্রার ঘাস রাখতে বলেছে আইসিসি, যাতে পেসাররা বাড়তি সুবিধা পায়-এমনটি বলা হয় প্রতিবেদনে।

এছাড়া সাধারণত ওয়ানডে ম্যাচের জন্য আইসিসি সর্বনিম্ন ৬৫ মিটার বাউন্ডারির নির্দেশনা দিলেও বিশ্বকাপের জন্য তারা বাউন্ডারি সীমানা সর্বনিম্ন ৭০ মিটার করার কথা বলছে বলে টাইমস অফ ইন্ডিয়ার দাবি। মাঠে ব্যাট-বলের ভারসাম্য আনতেই এমন চিন্তা আইসিসির।

নতুন প্রযুক্তি

তথ্যপ্রযুক্তির যুগে প্রতি বিশ্বকাপেই নিত্য নতুন প্রযুক্তি যোগ হয়। তবে এবার প্রথমবার দর্শকদের জন্য ভার্টিকাল বা লম্বালম্বি ভিডিও প্রডাকশন করতে যাচ্ছে আইসিসি। সংস্থাটি বলছে শুধু ক্রিকেট নয় খেলার ইতিহাসেই এটি হবে প্রথম ঘটনা।

মূলত যারা মোবাইল ফোনে খেলা দেখবেন তাদের কথা মাথায় রেখেই এ উদ্যোগ নিয়েছে আইসিসি ও সম্প্রচার সহযোগী ডিজনি স্টার। এর জন্য প্রতিটি ভেন্যুতে আলাদা করে ক্যামেরা সেট করা হয়েছে। এছাড়া ‘স্প্লিট স্ক্রিন’ বা একই সঙ্গে মাঠের দুটি ঘটনা দেখার সুযোগ থাকছে।

এই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের আগ দিয়ে একটা ব্লকচেইন পার্টনার ঘোষণা করেছে আইসিসি। সংস্থাটি নিয়ার ফাউন্ডেশন নামে এক কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে, যাদের কাজ হবে বিশ্বজুড়ে দর্শকদের আরো কিভাবে যুক্ত করা যায় ও নতুন নতুন অভিজ্ঞতা দেয়া যায় সেটা নিয়ে কাজ করা।

এছাড়া দর্শকদের জন্য থাকছে ভার্চুয়াল প্রতিযোগিতার আয়োজন। মাঠে যখন ক্রিকেটাররা ব্যাটে বলে লড়বেন তখন সমানতালে চলবে প্রযুক্তির লড়াইও।

আইসিসি তরুণ প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে এক হ্যাকাথন প্রতিযোগিতা শুরু করেছে, যার ফাইনাল হবে নভেম্বরে বিশ্বকাপ চলার সময়ই। এই হ্যাকাথনের বিশেষ দূত হিসেবে আইসিসি নিযুক্ত করেছে ভারতের সাবেক ক্রিকেটার অনিল কুম্বলেকে।

রাউন্ড রবিন লিগ ফরম্যাটে খেলা

দ্বিতীয়বারের মতো ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপের আয়োজন করছে ভারত। এবারের আসরটিতে নেই কোনো গ্রুপ পর্ব। ১০টি দল একে অপরের বিপক্ষে লড়বে শেষ চার নিশ্চিতের জন্য। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ।

রাউন্ড রবিন লিগের নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি দল ৯টি করে ম্যাচ খেলবে। লিগপর্ব শেষে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা চার দল উঠে যাবে সেমিফাইনালে। সেমিতে টেবিলের শীর্ষে থাকা দলটি লড়বে টেবিলের চতুর্থ দলের সঙ্গে আর দুইয়ে অবস্থান করা দলটি খেলবে তিনে থাকা দলের বিপক্ষে।

দুটি সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে। এরপর জয়ী দু’দল ফাইনাল খেলবে ২০ নভেম্বর।

সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে যেভাবে

বিশ্বকাপে অংশ নেয়া ১০টি দল লিগ পর্বে খেলবে ৯টি করে ম্যাচ। লিগ পর্বের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থাকা চার দল খেলবে সেমিফাইনালে। এখন প্রশ্ন হতে পারে কয়টি ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে একটি দলের।

যদিও পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে দলগুলোর জয়ের পরিমাণের ওপর। তবে বিশ্বকাপের গত আসরের পরিসংখ্যান থেকে কিছুটা ধারণা দেওয়া যেতে পারে। গত আসরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৯ ম্যাচের ভেতর ৭টিতে জয় পেলেই একটি দলের সেমি নিশ্চিত হবে। তবে আবহাওয়াজনিত সমস্যা থাকলে ছয় ম্যাচে জয় পেলেও খেলার সম্ভাবনা থাকবে নক আউট স্টেজে।

যদি লিগ পর্বে দুই দলের পয়েন্ট সমান হয়, তখন সমান পয়েন্টধারীদের নেট রানরেটের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে কে যাবে শেষ চারে।

প্রাইজমানি

বিশ্বকাপ জয়ের পুরষ্কার হিসেবে কাঙ্ক্ষিত ট্রফির সঙ্গে বড় অংকের অর্থ মেলে চ্যাম্পিয়নদের। তবে সেই পুরষ্কারের অঙ্কটা আর বাড়ায়নি আইসিসি। গতবারের মতো এবারও চ্যাম্পিয়নদের জন্য বরাদ্দ চার মিলিয়ন ইউএস ডলার। আর রানার্স আপ পাবে এর অর্ধেক অর্থাৎ দুই মিলিয়ন।

পুরো আসরের মোট প্রাইজমানি ১০ মিলিয়ন বা এক কোটি ইউএস ডলার। সেমিফাইনালে ওঠা দুই দল পাবে ৮ লাখ ডলার করে। আর প্রথম পর্বে বাদ পড়া বাকি ছয় দলের প্রত্যেকের জন্য বরাদ্দ এক লাখ ইউএস ডলার করে।

এর বাইরে ম্যাচ জয়ের পুরষ্কারও দেয়া হবে। প্রতিটি দল ম্যাচ জিতলেই পাবে ৪০ হাজার ডলার করে বাড়তি অর্থ।

সূত্র: বিবিসি

স্বাআলো/এসএস

Leave a Reply