রুহুল আমিন, যশোর: যশোর শিক্ষাবোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৬৪.২৯ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী। গতবারের (২০২৩) তুলনায় পাশের হার কমলেও জিপিএ-৫ বেড়েছে। গতবার পাসের ছিল ৬৯.৮৮ শতাংশ ও জিপিএ-৫ পেয়েছিলো আট হাজার ১২২ জন শিক্ষার্থী।
তবে, যশোর শিক্ষাবোর্ডের ১৩টি কলেজে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। আর সাতটি কলেজে একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি।
মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) যশোর শিক্ষাবোর্ডে চেয়ারম্যানের সভাকক্ষে ফলাফল ঘোষণার সময় চেয়ারম্যান প্রফেসর মর্জিনা আক্তার এসব তথ্য তুলে ধরেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ড. বিশ্বাস শাহীন আহমেদ, উপ-পরিচালক (হিঃ ও নিঃ) ড. এসএম রফিকুল ইসলাম, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নিয়ামত ইলাহী, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিন হাসান টুকুন ও সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান।
চেয়ারম্যান জানান, ২০২৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় যশোর শিক্ষাবোর্ড থেকে এক লাখ ২২ হাজার ৫১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। তার মধ্যে ছাত্র ৬১ হাজার ১২৭ জন, ছাত্রী ৬১ হাজার ৩৮৪ জন। পাস করেছে ৭৮ হাজার ৭৬৪ জন শিক্ষার্থী। পাসকৃতদের মধ্যে ছাত্র ৩৬ হাজার ২৪৭, ছাত্রী ৪২ হাজার ৫১৭ জন। জিপিএ-৫ পেয়েছে ৯ হাজার ৭৪৯ জন শিক্ষার্থী। এ গ্রেড পেয়েছে ৩৫ হাজার ১৩৭ জন, এ মাইনাস পেয়েছে ১৫ হাজার ৮১৯ জন, বি গ্রেড পেয়েছে ১১ হাজার ৮৪ জন, সি গ্রেড পেয়েছে ৬ হাজার ৭৮৭ জন, ডি গ্রেড পেয়েছে ১৮৮ জন। খুলনা বিভাগের ১০ জেলার মধ্যে খুলনা জেলায় ২৩ হাজার ৪২৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৬ হাজার ৬৮০ জন। পাসের হার ৭১.১৯ শতাংশ। বাগেরহাট জেলায় ৮ হাজার ৫২৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪ হাজার ৬৯৩ জন। পাসের হার ৫৫.০৪ শতাংশ। সাতক্ষীরা জেলায় ১৩ হাজার ৩৬২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাসে করেছে ৯ হাজার ৩৬৮ জন। পাশের হার ৫৮.৫২ শতাংশ। কুষ্টিয়া জেলায় ১৬ হাজার ৪৪২ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৯ হাজার ৬২২ জন। পাসের হার ৫৮.৫২ শতাংশ। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৭ হাজার ৫৪৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪ হাজার ৩৭২ জন। পাসের হার ৫৭.৯৬ শতাংশ। মেহেরপুর জেলায় ৪ হাজার ৮৯ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ২ হাজার ৬০ জন। পাসের হার ৫০.৩৮ শতাংশ। যশোর জেলায় ২০ হাজার ৬০৮ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ১৫ হাজার ১০ জন। পাসের হার ৭২.৮৪ শতাংশ। নড়াইল জেলায় ৫ হাজার ৭০১ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৩ হাজার ৪৯৩ জন। পাসের হার ৬১.২৭ শতাংশ। ঝিনাইদহ জেলায় ১৫ হাজার ৭৪৩ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৯ হাজার ৩৫১ জন। পাসের হার ৫৮.২৩ শতাংশ। মাগুরা জেলায় ৭ হাজার ৬৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে পাস করেছে ৪ হাজার ১১৫ জন। পাসের হার ৬৪.২৯ শতাংশ।
চেয়ারম্যান আরো জানান, যশোর শিক্ষাবোর্ডে ১৩টি কলেজে শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে। সেই কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে ঝিনাইদহ ক্যাডেট কলেজ, চৌগাছা এসএম হাবিবুর রহমান পৌর ডিগ্রি কলেজ, চৌগাছা হাকিমপুর মহিলা কলেজ, নড়াইল সদরের গোবরা মহিলা কলেজ, কেশবপুরের টিটা বাজিতপুর মহিলা কলেজ, ঝিকরগাছার ব্যাংদা হাজিরবাগ গালর্স স্কুল অন্ড কলেজ, কয়রার হাডডা পাবলিক কলেজ, খুলনার ইসলামাবাদ কলেজিয়েট স্কুল, সাতক্ষীরা কমার্স কলেজ, সাতক্ষীরার গোবরদাড়ি জরদিয়া স্কুল অন্ড কলেজ, চৌগাছার মাড়–য়া ইউসুফ খান স্কুল অন্ড কলেজ, খুলনার নেভি স্কুল অন্ড কলেজ, কুষ্টিয়ার সুনুপ স্কুল অন্ড কলেজ। শতভাগ ফেল করা ৭টি কলেজের মধ্যে রয়েছে মেহেরপুরের মোরকা জাগরণ কলেজ, খুলনার মডেল মহিলা কলেজ, খুলনার শাপলা কলেজ, সাতক্ষীরার আখরাখোলার আইডিয়াল কলেজ, মাগুরার গোপিনাথপুর স্কুল অন্ড কলেজ, যশোরের মণিরামপুর নেংড়হাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঝিনাইদহ নাসির উদ্দিন ইসলামিয়া কলেজ।
চেয়ারম্যার প্রফেসর মর্জিনা আক্তার বলেন, এবার ইংরেজি বিষয়ে ৩১ শতাংশ শিক্ষার্থী ফেল করেছে। সেইজন্য পাসের হার অনেক কমে গেছে। মূলত করোনার সময়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার ঘাটতি পূরণ হয়নি। সেটা কাটিয়ে উঠাও সম্ভব হয়নি। আগামীতে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও গভর্নিংবডির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজ করা সম্ভব হলে ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হবে। ফলাফল ভাল হবে। পাসের হার ও জিপিএ-৫ বৃদ্ধি পাবে।
স্বাআলো/এস