জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায় একটি ওরসের মেলায় নাগরদোলায় চড়া অবস্থায় পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে।
মর্মান্তিক এই ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাত পৌনে ৮টার দিকে উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিন উদ্দিনের ওরসের মেলায়। ঘটনার পরপরই পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে।
নিহত লাকী বেগম (১৯) বেগমগঞ্জ উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনছুর আলীর মেয়ে। আটক স্বামী শাকিব (বয়স উল্লেখ নেই) সদর উপজেলার মান্নান নগর বেদে পল্লীর মঙ্গলের ছেলে।
নিহতের মা শেফালী বেগম জানান, প্রায় এক বছর আগে শাকিবের সঙ্গে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। গত পনের দিন ধরে লাকী স্বামীসহ বাবার বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। রবিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে শাকিব তার স্ত্রীকে মারধর করে এবং জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলে। সেসময় শাকিব নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি ভেঙে ফেলে এবং নিজের মাথায়ও আঘাত করে বলে জানান শেফালী বেগম।
সোমবার সন্ধ্যায় লাকী, তার স্বামী শাকিব এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা একলাশপুরের ওই মেলায় ঘুরতে যান। সেখানে তারা স্বামী-স্ত্রী একসাথে নাগরদোলায় ওঠেন।
শেফালী বেগম নাগরদোলায় থাকা প্রত্যক্ষদর্শী এক নারীর উদ্বৃতি দিয়ে আরও জানান, নাগরদোলা চলার সময় শাকিব হঠাৎ তার স্ত্রী লাকীর গলায় ছুরি দিয়ে আঘাত করে। গুরুতর আহত ও রক্তাক্ত অবস্থায় লাকীকে দ্রুত ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বেগমগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হাবীবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত স্বামী শাকিবকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
তিনি আরো জানান, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই ঘটনায় পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পারিবারিক কলহের এমন করুণ পরিণতিতে স্থানীয়রা হতবাক।
স্বাআলো/এস