ঢাকা অফিস: বায়ু দূষণের কারণে ২০২১ সালে বাংলাদেশে দুই লাখ ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যাদের মধ্যে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশু রয়েছে ১৯ হাজারের বেশি। ২০ জুন ইউনিসেফের সঙ্গে অংশীদারত্বের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করে হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট। ‘স্টেট অব গ্লোবাল এয়ার ২০২৪’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাপী বাতাসের মানের উদ্বেগজনক অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে।
বিশ্বে বায়ু দূষণে ১৩ কোটির অধিক অকাল মৃত্যু, সর্বোচ্চ এশিয়ায়
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা বায়ুুদূষণজনিত রোগের বেশি শিকার হয়ে থাকে। এর প্রভাবে অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ, কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ, হাঁপানি ও ফুসফুসের রোগসহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত সমস্যা দেখা দেয়। বাংলাদেশে ব্যাপক হারে ওজোন গ্যাসের উপস্থিতি রয়েছে, যা বায়ুদূষণজনিত রোগের অন্যতম কারণ। বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে বায়ুুদূষণ সম্পর্কিত কারণে বিশ্বব্যাপী পাঁচ বছরের কম বয়সী সাত লাখের বেশি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গবেষকরা বলেছেন, বাতাসে প্রতি ঘনমিটারে দুই দশমিক পাঁচ মাইক্রোমিটার ব্যাসের বস্তুকণার পরিমাণ (পিপিএম) যদি শূন্য থেকে ৫০ এর মধ্যে থাকে, তাহলে ওই বাতাসকে বায়ু মানের সূচকে (একিউআই) ভালো বলা যায়। এই মাত্রা ৫১-১০০ হলে বাতাসকে মধ্যম মানের ও ১০১-১৫০ হলে বিপদসীমায় আছে বলে ধরে নেয়া হয়। আর পিপিএম ১৫১-২০০ হলে বাতাসকে অস্বাস্থ্যকর, ২০১-৩০০ হলে খুব অস্বাস্থ্যকর ও ৩০১-৫০০ হলে বিপজ্জনক বলা হয়।
ঢাকার বায়ু দূষণের মান অস্বাস্থ্যকর
বায়ু দূষণের কারণে পরিবেশ বিপর্যয়ের ফলে মানুষের জীবনে সংকট বাড়ছে। পরিবেশ রক্ষা করতে হলে বন ও নদীকে রক্ষা করতে হবে। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট নেটওয়ার্কের (বেন) জাতীয় সম্মেলনের এ কথা বলা হয়।
সারা বিশ্বে শিশুদের মৃত্যুর প্রধান কারণ অপুষ্টির পরই বায়ুদূষণ দ্বিতীয় শীর্ষস্থানীয় ঝুঁকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। দূষিত জ্বালানি ব্যবহার করে ঘরের ভেতরে রান্না করাই ছিলো এই বায়ুুদূষণের কারণ।
টানা দুই দিন বিশ্বে বায়ু দূষণের শীর্ষে ঢাকা
বাংলাদেশে ইউনিসেফের রিপ্রেজেন্টেটিভ শেলডন ইয়েট বলেন, বায়ুদূষণের কারণে লাখো মানুষ, বিশেষ করে শিশুরা স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। নিম্নমানের বাতাসের ক্ষতিকর প্রভাব শিশুদের ওপরই বেশি দেখা যায়। এর প্রভাবে তারা হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগে আক্রান্ত হয়। শুধু আজকে আমাদের শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও বাতাসের গুণগত মান উন্নত করতে টেকসই সমাধান বাস্তবায়ন করা গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাআলো/এস