হাসানুজ্জামান হাসান, লালমনিরহাট: ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তা ও ধরলা নদী তীরবর্তী এলাকা ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। হুমকির মুখে রয়েছে তিস্তার বাঁধ। এতে জেলার পাঁচ উপজেলায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ১০ হাজার পরিবার।
রবিবার (৭ জুলাই) তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ৫২ দশমিক শূন্য ২ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমা ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ সেন্টিমিটার)।
এর আগে ভোর ৬টায় তিস্তার পানি ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। অন্যদিকে ধরলা নদীর শিমুলবাড়ী পয়েন্টে বিপৎসীমা ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা এলাকার হাজারো মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন। হাঁটু ও কোমর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলের রাস্তা ডুবে ও বাড়িঘরে পানি ওঠায় রান্না করতে না পেরে শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করছেন তারা।
নলকূপ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নিরাপদ পানির অভাব দেখা দিয়েছে। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গরু-ছাগল নিয়েও পড়েছেন বিপাকে। কলাগাছের ভেলা, নৌকা দিয়ে বাড়িতে যাতায়াত করছেন অনেকেই।
হাতীবান্ধা উপজেলায় সিন্দুর্না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, অত্র ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে প্রায় ৫০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে নদী ভাঙন।
পাউবোর লালমনিরহাট জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা এই অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়তে পারে। ফলে নিচু এলাকা প্লাবিত হবে। ধস এলাকায় জরুরি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে। আমরা সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, পানিবন্দি মানুষের তালিকা চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তালিকা পেলেই সহযোগিতা করা হবে।
স্বাআলো/এস