২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে শুক্রবার বিকালে যশোরের অনুশীলন পাঠাগারে ‘চব্বিশের গণআন্দোলন ও আজকের মূল্যায়ন’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিপ্লবী গবেষণা সেল, যশোর আয়োজিত এই সেমিনারে বক্তারা বলেন, আন্দোলনের এক বছর পরও বৈষম্য রয়ে গেছে এবং সংস্কারের নামে চলছে কেবল ক্ষমতার পুনর্বিন্যাস। তাঁরা শোষণমুক্ত রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র ও প্রান্তিক জনগণের অংশগ্রহণে বৃহত্তর আন্দোলনের প্রস্তুতির আহবান জানান।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন খবির শিকদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুমাইয়া শিকদার ইলা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন শ্যামল শর্মা।
প্রবন্ধে সুমাইয়া শিকদার ইলা বলেন, চব্বিশের আন্দোলন কেবল একটি ছাত্র আন্দোলন ছিলো না, এটি ছিলো বৈষম্যের বিরুদ্ধে এক ঐতিহাসিক জাতীয় প্রতিবাদ। এই আন্দোলনের পর জনগণের প্রত্যাশা ছিলো একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র ব্যবস্থার সূচনা জানিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সংস্কারের নামে চলছে ক্ষমতার পুনর্বিন্যাস। সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
মূল প্রবন্ধে আরো বলা হয়, আন্দোলনের সবচেয়ে বড় অর্জন হলো ‘বৈষম্য’ শব্দটি এখন রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে এসেছে, তবে তা বাস্তবে রূপ পায়নি। কৃষক ফসলের ন্যায্য দাম পাচ্ছে না, শ্রমিক পাচ্ছে না ন্যায্য মজুরি, শিক্ষার্থীরা রয়েছে ভবিষ্যৎহীনতার মধ্যে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই ব্যবস্থা বদলের জন্য কোনো সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়নি।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম মূলত ‘নতুন বোতলে পুরনো মদের পুনরাবৃত্তি’। দলীয় চরিত্র, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির সংস্কৃতি থেকে বের হতে না পারলে আসল পরিবর্তন সম্ভব নয়।’
তারা আরো বলেন, শুধু সরকারের পতন নয়, প্রয়োজন শোষণমুক্ত এক রাষ্ট্র ব্যবস্থা যেখানে রাষ্ট্র থাকবে জনগণের হাতে এবং অর্থনীতি পরিচালিত হবে জনকল্যাণের লক্ষ্যে।
সেমিনারে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য দেন সুরাইয়া শিকদার এশা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কামাল উদ্দিন রানা, সামিউল আজিম, রায়হান আবির ও রাহুল প্রমুখ।
স্বাআলো/এস