জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল: দীর্ঘ ২৮ বছর পতিক্ষার পর আগামী ২৮ মে মঙ্গলবার বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ,নড়াইল জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন সম্মেলন হতে যাচ্ছে। এ ঘোষণায় যুবলীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে প্রাণ ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিন পর কে কে হচ্ছেন জেলা যুব লীগের কর্নধার,এ নিয়ে চলছে জল্পনা -কল্পনা।
সম্মেলন সফল করার লক্ষে শুক্রবার শহরের পৌরএলাকার মাছিমদিয়ায় অবস্থিত পালকি কমিউনিটি সেন্টারে
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ,নড়াইল জেলা শাখার আয়োজনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
ইতিমধ্যে ১৯ জন নেতা জেলা যুবলীগের শীর্ষ দুইটি পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, নড়াইলের দুই এমপি এবং জেলা আ’লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের আশীর্বাদ পেতে দৌড় ঝাঁপ শুরু করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নড়াইল ভিক্টোরিয়া কলেজের সুলতান মঞ্চ চত্বরে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাছিম এমপি। প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ এর আলহাজ্ব মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ অতিথি থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুউফ নড়াইল-০২ আসনের এমপি মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা, নড়াইল-০১ আসনের এমপি কবিরুল হক মুক্তি, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামীলীগ ,যুবলীগ এর নেতা কর্মিরা উপস্থিত থাকবেন।
জানা গেছে, নড়াইলের এক সময়কার শক্তিশালী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের সর্বশেষ জেলা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৯৫ সালের ১৮ অক্টোবর। এর ১০ বছর পর ২০০৫ সালের ৩ মার্চ কেন্দ্র ঘোষিত আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়। এ কমিটি ১৩ বছর চলার পর ২০১৮ সালের ৪ মার্চ ওয়াহিদুজ্জামানকে জেলা যুবলীগের আহবায়ক ও তিন জনকে যুগ্ম আহবায়ক করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে উপজেলাসহ বিভিন্ন ইউনিটের সম্মেলন শেষে জেলা যুবলীগের সম্মেলনের নির্দেশ দেয়া হলেও তা আর হয়নি। ২০২৩ সালের আগষ্ট মাসে জেলা যুবলীগের আহবায়ক ওয়াহিদুজ্জামানকে অব্যাহতি দেয়া হলেও ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির কমিটি বাকিরা বহাল রয়েছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারী মাসে নতুন কমিটি গঠনের লক্ষে কেন্দ্রীয় যুবলীগ নড়াইল জেলা যুবলীগের ৯ জন সভাপতি এবং ১০জন সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীর জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করেন। এর মধ্যে সভাপতি পদে উল্লেখযোগ্যরা হলেন নড়াইল জেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক ফরহাদ হোসেন, যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডঃ গাউসুল আজম মাসুম, যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান, জেলা যুবলীগের সদস্য অ্যাডঃ শরিফুল ইসলাম নান্তু ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামরুজ্জামান কামাল। সাধারণ সম্পাদক পদে উল্লেখযোগ্য পদ প্রত্যাশিরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমান জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান খোকন সাহা, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৌমেন বসু, নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক ভিপি জাহাঙ্গীর হোসেন ইকবাল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি তোফায়েল মাহমুদ তুফান, সদর উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মীনা মরফিদুল হক শিল্পী ও নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের সাবেক সভাপতি আবু সুফিয়ান বাহার। জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশি একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ইতিমধ্যে সম্মেলনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সাব কমিটি গঠনে কয়েকটি মিটিং-এ নিজেদের ক্ষমতা অটুট রাখতে, সম্মেলনের দিন মঞ্চের সামনে ও মাঠ দখলে রাখতে এখন থেকে দু’গ্রুপই তৎপর। এ বিষয়ে যদি পদক্ষেপ নেয়া না যায় তাহলে মারামারি সম্ভাবনা রয়েছে। জাতীয় সংসদের হুইপ, জেলা আ.লীগ সভাপতি গ্রুপ এবং জেলা আ.লীগ সাধারণ সম্পাদক গ্রুপের বলয়ের মধ্যেই কমিটি গঠন হবে বলে তারা মনে করেন।
জেলা যুবলীগের সাবেক সফল সভাপতি ও বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু বলেন, দীর্ঘ বছর যুবলীগের সম্মেলন না হওয়ায় যুবলীগ অনেক দূর্বল হয়ে পড়েছে। এজন্য আমার আশা ছিল একটু সময় নিয়ে একটি জমজমাট সম্মেলন হবে। উপজেলা নির্বাচন শেষ না হতেই যুবলীগের সম্মেলন হচ্ছে। নির্বাচনে হারজিত রয়েছে। আবার সবাই দলের লোক। ফলে সম্মেলনে একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। স্বল্প সময়ের নোটিশে সম্মেলন অনেকটা এলোমেলো ভাবে হচ্ছে। যুবলীগে তার বলয় বা গ্রুপিং-এর বিষয়ে বলেন, এ বিষয়ে কিছু বলবো না; তবে শুধু গ্রুপিং করলেই হবে না। যারা ১৫-২০ বছর ধরে যুবলীগ করেছেন, যারা মাঠে দলের দূর্দীনে ছিলেন এবং আছেন এসব পরীক্ষীত নেতাদের নিয়ে একটি শক্তিশালী কমিটি করতে হবে।
স্বাআলো/এস