চলতি বছরের জুন মাসে বাংলাদেশে ডেঙ্গু এবং করোনাভাইরাসের প্রকোপ হঠাৎ করেই তীব্র আকার ধারণ করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এই মাসে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা দুটোই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে, যা হাসপাতালগুলোর উপর চাপ সৃষ্টি করছে। জুন মাস ছিলো চলতি বছরে ডেঙ্গু ও করোনায় এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যুর মাস।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, জুন মাসে ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যা চলতি বছরে এক মাসে সর্বোচ্চ। এই মাসে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন পাঁচ হাজার ৯৫১ জন। সব মিলিয়ে চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মোট ১০ হাজার ২৯৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং ৪২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত মাসগুলোতে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা জুনের চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল (জানুয়ারি-১০, ফেব্রুয়ারি-৩, মার্চ-০, এপ্রিল-৭, মে-৩)।
ভয়াল রূপে ফিরছে ডেঙ্গু ও করোনা
অন্যদিকে, জুন মাসে করোনাভাইরাসের সংক্রমণও আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। জুন মাসে মোট ১ হাজার ৪০৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ২২ জনের। উদ্বেগজনক বিষয় হলো, চলতি বছরে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে যতজন মারা গেছেন (২২ জন), তাদের সবাই জুন মাসেই মারা গেছেন।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হিসেবে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি) করোনার নতুন দুটি সাব-ভ্যারিয়েন্ট এক্সএফজি এবং এক্সএফসি বৃদ্ধির তথ্য তুলে ধরেছে। আইসিডিডিআর,বির তথ্য অনুযায়ী, জুনের প্রথম ১০ দিনে করা ১৪টি জিনোম সিকুয়েন্সের মধ্যে ১২টিতেই এই নতুন ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছে, যা ওমিক্রন জেএন.১-এর একটি উপশাখা। সম্প্রতি সংগৃহীত প্রায় সব নমুনাতেই এক্সএফজি ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যাচ্ছে।
করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২০ লাখ ৫২ হাজার ৯৩ জন এবং মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২১ জনের।
চিকিৎসক এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার নতুন এই ধরনটির সংক্রামিত করার ক্ষমতা বেশি হলেও রোগের তীব্রতা কম। তবে তারা সতর্ক করেছেন যে, অসাবধানতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে না চললে ধরনটি যেকোনো সময় আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। তাই সবাইকে যথেষ্ট সচেতন থাকা এবং প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
স্বাআলো/এস