সেই ওসি মাসুদ রানার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু

গাইবান্ধা প্রতিনিধি: নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন সিন্ডিকেটের কাছে মোটা অঙ্কের টাকা ঘুষ নিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলা রুজু করা গাইবান্ধা সদর থানার সেই অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন পুলিশ পরিদর্শক (নি:) তরিকুল ইসলাম। তিনি ডিসিপ্লিন অ্যান্ড প্রফেশনাল স্টান্ড্যার্ড ২ রংপুর জোন এর একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।

বুধবার (১০ জুলাই) রংপুর কোতয়ালী থানার রাস্তার দক্ষিণ পাশে পুলিশ ক্লাবের নিচ তলায় পাঁচ নম্বর কক্ষে এই তদন্ত অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছেন অফিসার ইনচার্জ (ওসি)র বিরুদ্ধে আইজিপির কাছে অভিযোগকারী বিচার প্রার্থী ভুক্তভোগী সাংবাদিক মিলন খন্দকার। তিনি আনন্দ টিভি ও জাতীয় দৈনিক জনতা পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি ও গাইবান্ধা প্রেসক্লাবের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক।

গাইবান্ধায় বিচারকের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি

জানা গেছে, গাইবান্ধা সদর উপজেলার নদীবেষ্ঠিত কামারজানীতে নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিনে রাতে বালু তুলে বিক্রী করে আসছিলো ওই এলাকার জাহাঙ্গীর,রানা, সাইফুল, মিল্টন সহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র। এই চক্রের বিরুদ্ধে চলতি বছরের গত ১৭ ফেব্রুয়ারী স্যাটেলাইট টেলিভিশন আনন্দ টিভিতে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রচার হয়। সেই সাথে প্রিন্ট পত্রিকা, অনলাইন পোর্টালসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় সংবাদটি। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ব্যাপকভাবে প্রচার হতে থাকে।

পরে সংবাদের সূত্র ধরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কামারজানি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা খন্দকার আজিজুর রহমান বাদী হয়ে এই চক্রের রানা মিয়া ও সাইফুল ইসলামের নাম উল্লেখসহ ১২ থেকে ১৫ জন অজ্ঞাতনামা অবৈধ বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ২৯।

১৪০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ, পানিবন্দি ১ লাখ মানুষ

এছাড়া এসব ঘটনা ও প্রচারিত সংবাদের প্রেক্ষিতে জেলায় বিভিন্ন মহলে থানা পুলিশ ও প্রশাসনের নামে নেতিবাচক আলোচনা ও সমালোচনা হতে থাকে। ফলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসন বাধ্য হয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করাসহ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মাহমুদ আল হাসান অভিযান পরিচালনা করে বালু পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত অন্তত ১৫টি গাড়ী জব্দ করে জরিমানা আদায় এবং অবৈধভাবে তুলে মজুদকৃত বালু নিলামে বিক্রী করাসহ প্রায় ২০ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা করেন।

এতেই অবৈধ বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের বিপুল কর্মযোগ্য বন্ধ হওয়ায় সংঘবদ্ধ চক্রটির সদস্য জাহাঙ্গীর আলম নিজেকে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে সংবাদ প্রচারের প্রায় আড়াই মাস পর সাংবাদিক মিলন খন্দকার, সুমন ও রকির বিরুদ্ধে ছিনতাই ও চাঁদাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তুলে গাইবান্ধা সদর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগ পেয়ে ২৪ এপ্রিল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাসুদ রানা মোটা অংকের টাকা ঘুষ নিয়ে, কোনো তদন্ত ছাড়াই ভিত্তিহীন ও হয়রানীমুলক চাঁদাবাজীর মিথ্যা মামলা রুজু করেন। মামলা নম্বর ৩২।

১৫ জেলায় বন্যা, ক্ষতিগ্রস্ত ২০ লাখ মানুষ

তবে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় রানা মিয়া নামে যাকে স্বাক্ষী করা হয়েছে তিনি সংবাদ প্রকাশের পরে কামারজানি ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা খন্দকার আজিজুর রহমানের গাইবান্ধা সদর থানায় দায়ের করা বালু মহাল আইনের মামলার এক নম্বর আসামী। এখানেই স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয় মামলার বাদী জাহাঙ্গীর আলম এবং সাজানো স্বাক্ষী রানা মিয়া উভয়ই অবৈধ বালু উত্তোলনকারী সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

Popular

আপনার জন্য
Related

সাতক্ষীরায় পুকুর থেকে ৩৪ পিস হাসুয়া উদ্ধার

রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে পুকুর থেকে ৩৪ পিস...

৪৮ ঘণ্টার আল্টিমেটাম পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের, লংমার্চের হুঁশিয়ারি

ঢাকা অফিস: পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা তাদের ছয় দফা দাবি...

যশোরে আ.লীগ নেতাদের বাড়িতে পুলিশের অভিযান

নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও...

স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়া মঞ্চের সভাপতি

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে...