সম্পাদকীয়: গত ২ জুন চুয়াডাঙ্গার দুইজন সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠে চুয়াডাঙ্গা সদর থানা-পুলিশের উপ-পরিদর্শক ও সহকারী উপ-পরিদর্শকের বিরুদ্ধে। এসময় বেসরকারি স্যাটেলাইট চ্যানেল ডিবিসি টেলিভিশনের ক্যামেরা পারসন শিমুল হোসেনকে মারধর, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের পর পুলিশ পিকআপ ভ্যানে তোলা, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং ডিবিসির চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি কামরুজ্জামান সেলিমকেও হেনস্তা করার অভিযোগ ওঠে। অনলাইন নিউজ পোর্টাল স্বাধীন আলো এ বিষয়ে ৬ জুন একটি বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
চুয়াডাঙ্গায় দুইজন সংবাদকর্মীকে হেনস্তা করার কারণে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে। কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শককে ঘটনায় জড়িত পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য পত্র দিয়েছেন। সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনাটিকে অত্যন্ত অনভিপ্রেত উল্লেখ করে তিনি আগামী ৩০ জুলাইয়ের
মধ্যে প্রতিবেদন দেয়ার জন্যও বলেছেন।
এই ঘটনার পরদিন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির একমাত্র সদস্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দীন আল আজাদ (পিপিএম-সেবা) তদন্ত কাজ শুরু করেন। ওই দিনই সাংবাদিক নেতারা আলোচনায় বসে পুলিশের এমন আচরণের নিন্দা জ্ঞাপন করেন।
হামলার শিকার শুধু চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকরা নয়, দেশ জুড়ে মিডিয়া কর্মীরা এভাবে হামলা ও হত্যার শিকার হচ্ছেন। গণমাধ্যমে তার চিত্র পাওয়া যায়। কিন্তু এর প্রতিকার নেই। এজন্য দুর্বৃত্তরা বুঝে নিয়েছে সাংবাদিকরা এমন এক প্রাণি যাদের মারলে কাটলে কোন সমস্যা নেই। এজন্য তারা নির্ভয়ে তাদের ওপর হামলা চালাচ্ছে, হত্যা করছে।
সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার এক পরিসংখ্যান তুলে ধরে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন । গত ১৩ বছরে সারা দেশে ৪১ জন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। দুঃখজনক বিষয় হলো সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় মামলা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তার কোন কিনারা হচ্ছে না। যে সাংবাদিকদের অক্লান্ত শ্রমে দেশ ও জাতির প্রতিদিনকার সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, আবেগ-উচ্ছাস,অন্যায়-অবিচার, ভালো-মন্দ সব কিছুর চিত্র ফুটে ওঠে সেই সাংবাদিকদের এমন নিরাপত্তাহীনতায় রাখা সমীচিন নয়।
স্বাআলো/এস/বি