কোরবানি যাদের ওপর ওয়াজিব

| April 19, 2025

ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত হলো কোরবানি, যা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে সামর্থ্যবান মুসলমানদের ওপর ওয়াজিব। আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই ধর্মীয় বিধানটি পালনের প্রস্তুতি চলছে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা তাঁর নবীর উদ্দেশে বলেছেন, সুতরাং তোমার রবের উদ্দেশে সালাত আদায় করো ও কোরবানি করো। (সুরা কাওসার: ২) এবং অন্য আয়াতে সকল জাতির জন্য কোরবানির নিয়ম থাকার কথা উল্লেখ করে রিজিক হিসেবে দেয়া পশুর ওপর আল্লাহর নাম স্মরণের নির্দেশ দিয়েছেন। (সুরা হজ: ৩৪)। হাদিস শরিফেও এর গুরুত্ব বোঝাতে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কোরবানি করে না, সে যেনো ঈদগাহের কাছেও না আসে। (সুনানে ইবনে মাজা: ৩১২৩)।

ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী, প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ মস্তিষ্কসম্পন্ন মুসলিম নর-নারী, যিনি জিলহজ মাসের ১০ তারিখ ফজর থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ‘নিসাব’ পরিমাণ সম্পদের মালিক হবেন, তার ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। তবে অপ্রাপ্তবয়স্ক, মানসিকভাবে অসুস্থ (পাগল) এবং মুসাফির ব্যক্তি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেও তাদের ওপর কোরবানি আবশ্যক নয়।
‘নিসাব’ হলো সেই সর্বনিম্ন পরিমাণ সম্পদ, যা থাকলে কোরবানি ওয়াজিব হয়। এর পরিমাণ হলো- সাড়ে সাত (৭.৫) ভরি স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন (৫২.৫) ভরি রুপা। কারো কাছে যদি এই পরিমাণ স্বর্ণ বা রুপা না থাকে, কিন্তু নগদ টাকা, ব্যবসায়িক পণ্য অথবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত অন্যান্য সম্পদ (যেমন বাড়তি জমি, বাড়ি, গাড়ি ইত্যাদি) থাকে, যার সম্মিলিত মূল্য সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার বর্তমান বাজার মূল্যের সমান বা তার বেশি, তাহলেও তিনি নিসাবের মালিক বলে গণ্য হবেন এবং তার ওপর কোরবানি ওয়াজিব হবে। এমনকি যদি সোনা, রুপা বা নগদ অর্থ পৃথকভাবে নিসাব পরিমাণ না থাকলেও, এগুলোর সম্মিলিত মূল্য সাড়ে ৫২ তোলা রুপার মূল্যের সমান বা বেশি হয়, তাহলেও কোরবানি ওয়াজিব। (আল-মুহীতুল বুরহানী : ৮/৪৫৫)।

একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, জাকাতের ক্ষেত্রে নিসাব পরিমাণ সম্পদ পূর্ণ এক বছর মালিকানায় থাকা শর্ত হলেও, কোরবানির ক্ষেত্রে এই শর্ত প্রযোজ্য নয়। জিলহজ মাসের নির্দিষ্ট তিন দিনের (১০ তারিখ ফজর থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত) মধ্যে যেকোনো সময় কেউ নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলেই তার ওপর কোরবানি আবশ্যক হয়ে যায়। মুসলমানদের জন্য এই বিধানগুলো জেনে সঠিকভাবে কোরবানি পালন করা জরুরি।

স্বাআলো/এস