৪৬তম বিসিএসে ১৭ জনকে প্রশ্ন দেন সাজেদুল

ঢাকা অফিস: বিসিএসের প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (বিপিএসসি) ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম একজন।

নতুন খবর হলো, গত এপ্রিলে অনুষ্ঠিত ৪৬তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় এই অফিস সহায়কের মোট ১৭ জন প্রার্থী ছিলো। প্রশ্ন সরবরাহের বিনিময়ে তিনি তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে অন্তত ২০ লাখ টাকা করে নিয়েছেন। এর মধ্যে পাস করেছেন ১৩ জন।

প্রশ্নফাঁস: জড়িত ছিলেন অনেকে, আরো আটজন শনাক্ত

জানা গেছে, ২০ বছর ধরে পিএসসির অফিস সহায়কের চাকরি করছেন সাজেদুল। প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। বর্তমানে রয়েছেন কারাগারে।

যেভাবে প্রশ্নফাঁস চক্রের একজন হয়ে ওঠেন সাজেদুল

চাকরিতে প্রবেশের কিছুদিন পরই সাজেদুল খবর পান পিএসসির সে সময়ের গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী বিজি প্রেসের কর্মচারী আতিকুল ইসলামের মাধ্যমে পিএসসির বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেন। এতে তার উপার্জনও মন্দ নয়। এরপরই তিনি ওই চক্রে নিজেকে সম্পৃক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। একটু একটু করে সখ্যতা গড়ে তোলেন আবেদ আলীর সঙ্গে। প্রথমে পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরির পরীক্ষায় আবেদ আলীকে তিনজন প্রার্থী দিলেও পরবর্তীতে এর সংখ্যা বাড়তে থাকে। একইসঙ্গে বাড়তে থাকে সাজেদুলের উপার্জনও। এভাবেই তিনি চক্রের অন্যতম একজন হয়ে ওঠেন। শুরু করেন নিজেই প্রশ্ন ফাঁস। পরে চক্রের অন্য সদস্যদের কাছে সেই প্রশ্ন বিক্রি করে হাতিয়ে নিতেন মোটা অংকের অর্থ।

রেলওয়ের প্রশ্ন যেভাবে ফাঁস করেন সাজেদুল

গত ৫ জুলাই রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী (নন ক্যাডার) এর নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর প্রশ্নও ফাঁস করেন সাজেদুল। কৌশলে পিএসসির সদস্য সৈয়দ গোলাম ফারুকের চেম্বারে থাকা ট্র্যাংকে থাকা প্রশ্নপত্র তিনি চুরি করেন। এরপর পিএসসির ফটোকপি মেশিন থেকেই সেগুলোর ফটোকপি করেন। পরে মূল কপি যথাস্থানে রেখে দেন।

৩০ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের কথা স্বীকার করেন আবেদ আলী

পিএসসির ডেসপাস রাইটার খলিলুর রহমান এ পদের জন্য সাজেদুলকে ৯৮ জন প্রার্থী দিয়েছিলেন। তাদের পাস করাতে তিনি খলিলুরের কাছ থেকে ৩৫ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়েছিলেন। পাশাপাশি একই পরীক্ষার প্রশ্নের এক কপি তিনি আবেদ আলীকে দিয়ে নিয়েছিলেন ৭৫ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, সাজেদুলেরই এত প্রার্থী থাকলে চক্রের অন্য সদস্যদের আরো অনেক প্রার্থী ছিলো বলে আমাদের ধারণা। কার কত প্রার্থী ছিলো এবং তারা কারা, সেসব বিষয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছে সিআইডি।

স্বাআলো/এস//বি