সম্পদকীয়: ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে দেশের সাত জেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া উপকূলীয় ও এর আশপাশের ১৯টি জেলায় প্রায় দুই লাখ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। ২৯ মে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স কো–অর্ডিনেশন সেন্টারের দুর্যোগসংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
২৬ মে দিনগত রাতে বাংলাদেশে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এই ঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপকূলের তিন জেলায় ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাঁধসংলগ্ন নিচু এলাকা উপচে লোকালয়ে নোনা পানি প্রবেশ করেছে। শত শত প্রামে চিংড়ির ঘেরসহ ফসলি জমিতে নোনা পানি প্রবেশ করেছে। অসংখ্য ঘেরের চিংড়ি ও পুকুরের মাছ ভেসে গেছে।
খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলায় মোট ৬১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাগেরহাট জেলায় পল্লী বিদুৎ সমিতির গ্রাহক প্রায় পাঁচ লাখ। প্রাথমিক হিসেবে তাদের অর্ধশত বৈদ্যুতিক পোল ভেঙে গেছে, হেলে পড়েছে ৮৬টি। ভেঙেছে গেছে ৪০০ মিটার, ৩৫টি ট্রান্সফরমার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কৃষক ও মৎস্য চাষিদের ক্ষতি ১০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা কৃষি বিভাগের ।
প্রাথমিক হিসেবে ফসলের ১১ হাজার ৫৮১ হেক্টর জমি আক্রান্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়েরর প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও জোয়ার-জলোচ্ছাসে ৩৫ হাজার মৎস্যঘের তলিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে প্রায় ৭৫ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঝড়ে জেলার ৭৫টি ইউনিয়নের সবগুলোই কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণে বেশ বেগ পেতে হবে।
কিন্তু তবুও সাহস নিয়ে ক্ষতি পূরণে বুক বেধে নামতে জনতাকে। এর পর সরকারের সহযোগিতাতো থাকবেই। কিছু এলাকায় পুরোপুরি এবং কিছু এলাকায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাঁধ। এতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাঙালির সঙ্গ সাথি। এমন দৃযোর্গে প্রতি বছর বিপুল ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এ ক্ষতি কাটিয়ে মানুষ সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
কেউই হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকে না। এবারের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতেও মানুষ অতীতির মত বুক বেধে নেমে পড়বে। সেই সাথে বিপুল সহযোগিতা নিয়ে সরকার এগিয়ে আসবে। এতে মানুষ সাহস পাবে। তাই ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে হতাশ হলে চলবে না। তাদেরকে এগিয়ে যেতেই হবে। সাহস নিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে।
স্বাআলো/এস