ভালোবাসার বলি

নববধূর ‘পরকীয়া প্রেম’: বিয়ের সপ্তাহ না পেরোতেই স্বামীকে হত্যা

| May 17, 2025

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় বিয়ের মাত্র সাত দিনের মাথায় স্ত্রীর হাতে নির্মমভাবে খুন হয়েছেন এক যুবক। শুক্রবার (১৬ মে) দিবাগত মধ্যরাতে পৌরশহরের মসজিদ পাড়া এলাকায় এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনার পর পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রীকে আটক করেছে।

নিহত ব্যক্তির নাম মেহেদী হাসান (২৭)। তিনি মৃত জলফু মিয়ার ছেলে এবং পৌরশহরের মসজিদ পাড়ায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের বাড়ির ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতেন। তার পৈত্রিক বাড়ি কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় হলেও প্রায় ২০ বছর ধরে তিনি মায়ের সাথে আখাউড়ায় থাকতেন। তিনি একটি ওষুধের দোকানে কাজ করতেন এবং পরিবার তাকে শান্ত স্বভাবের বলে বর্ণনা করেছে।

আটককৃত স্ত্রীর নাম জান্নাত আক্তার (১৭)। তিনি মসজিদ পাড়ার আল আমিনের মেয়ে। গত ৯ মে পারিবারিকভাবে মেহেদী হাসানের সাথে জান্নাত আক্তারের বিয়ে হয়েছিল।

নিহত মেহেদী হাসানের পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে খাবার খেয়ে মেহেদী হাসান ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর রাতে তার স্ত্রী জান্নাত আক্তার বাড়ির মালিককে ডেকে জানান যে তার স্বামী অসুস্থ। বাড়ির মালিক ও স্থানীয় লোকজন ঘরে গিয়ে মেহেদী হাসানকে মেঝেতে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নামাজ পড়তে উঠে ছুরিকাঘাতে নারী খুন

স্থানীয় সূত্রে আরো জানা যায়, বিয়ের আগে থেকেই জান্নাত আক্তারের অন্য এক ছেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিল এবং তিনি এই বিয়েতে মত ছিলেন না বা স্বামীকে মেনে নিতে পারছিলেন না। নিহতের পরিবার অভিযোগ করছে যে প্রেমের সম্পর্কের কারণেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

নিহত মেহেদী হাসানের মা বকুল বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আট দিন হইছে আমার ছেলেরে বিয়ে করাইছে। বউয়ের অন্য ছেলের সাথে প্রেম ছিল। সে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। সরকারের কাছে ফাঁসি চাই।

নিহতের বড় ভাই আবুল কালাম অভিযোগ করেন, তার ছোট ভাই খুব শান্ত স্বভাবের ছিল। তার স্ত্রী তাকে ৬টি ঘুমের ট্যাবলেট খাইয়ে অচেতন করে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। তিনি স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগও তোলেন।

আখাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ ছমিউদ্দিন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জান্নাত আক্তার তার স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

তিনি জানান, বিয়ের আগে তার এক ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো এবং বিয়ের পর তিনি স্বামীকে মেনে নিতে পারছিলেন না। গত রাতে তিনি স্বামীকে দিয়ে ঘুমের ট্যাবলেট আনান এবং কোকের সাথে ছয়টি ট্যাবলেট মিশিয়ে খাইয়ে মেহেদী হাসানকে অচেতন করেন। এরপর বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করেন।

পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। এই ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

স্বাআলো/এস