খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে কর্তৃপক্ষ। একইসাথে আগামী ২ মে আবাসিক হল খোলা এবং ৪ মে থেকে শিক্ষা কার্যক্রম পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের জরুরী সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
তবে, সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও তথ্য শাখা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এদিন অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় গত ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ঘটে যাওয়া ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন ও গ্রহণ করা হয়। প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত করে সাময়িকভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আরও তদন্ত ও চূড়ান্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সভায় আগামী ৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষা কার্যক্রম এবং ২ মে থেকে আবাসিক হলসমূহ খুলে দেয়ার সিদ্ধান্তও গৃহীত হয়।
এদিকে, সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট হতে পারেননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। তারা অবিলম্বে, অর্থাৎ সোমবার রাত থেকেই হল খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, সিন্ডিকেট সভার পর কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানায়নি। হল খোলা ও শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর তারিখ অনেক দেরিতে নির্ধারণ করায় তাদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে এবং হলে থাকতে না পারায় অনেকের টিউশনিতেও সমস্যা হচ্ছে বলে তারা জানান।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আরো জানান, বহিষ্কৃত ৩৭ জনের তালিকা দেখে তারা মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সংবাদ সম্মেলন করে তাদের পরবর্তী অবস্থান জানাবেন।
উল্লেখ্য, ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি এবং এর সাথে সম্পর্কিত দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে একটি ছাত্র সংগঠনের সাথে সাধারণ শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং আবাসিক হলগুলো খালি করে দেয়া হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই সোমবার সিন্ডিকেট এই নতুন সিদ্ধান্ত নিলো।
স্বাআলো/এস