মিলন হোসেন, বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানিকৃত ১৫ টন ৭৫০ কেজি সালফিউরিক এসিড জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তপক্ষ।
জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে রবিবার পণ্য চালানটি আটক করা হয়। যার বিল অব এন্ট্রি নম্বর সি-৫৫৯০৪।
পণ্যটির ইনভয়েজ মূল্য ৯ হাজার ৬০৭.৫ মার্কিন ডলার। যা বাংলা টাকায় হবে ১১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। কাস্টমস ডিউটিসহ পণ্য চালানটির মূল্য প্রায় ২১ লাখ টাকা বলে কাস্টমস জানাই। পণ্য চালানটি ভারত থেকে আমদানি করেছেন চট্রগ্রামস্থ রিফ লেদার লিমিটেড নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো ভারতের কেরেলাস্থ ক্যাটালাইস কেমিক্যাল ইন্ডাট্রিজ।
পণ্য চালানটি বন্দর থেকে খালাস করনের দায়িত্বে ছিলো মোশারফ টেডার্স নামে এক সিএন্ডএফ এজেন্ট।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, চট্রগ্রামস্থ রিফ লেদার লিমিটেড নামে একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান গত ২ জুলাই ফরমিক এসিড নাম ঘোষণা দিয়ে ১৫.৭৫ মেট্রিক টন সালফিউরিক এসিড আমদানি করেন। পণ্য চালানটি বন্দরের ৩৮ সেডে রাখা হয়। জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) তথ্যের ভিত্তিতে পণ্য চালানটি কায়িক পরীক্ষাকালে নমুনা সংগ্রহ করে ক্যামিকেল পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়। ল্যাব টেস্টে ফরমিক এসিডের পরিবর্তে সালফিউরিক এসিড পাওয়া যায়।
আর সালফিউরিক এসিড আমদানি করতে হলে এলসি খোলার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিস্ফোরক অধিদফতরের অনুমতি প্রয়োজন হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিস্ফোরক অধিদফতরের অনুমতি ছাড়া সালফিউরিক এসিড আমদানি করা সম্পূর্ন নিষিদ্ধ। এ পণ্য চালানে মোটা অঙ্কের শুল্ক ফাঁকির ঘটনা ঘটতো। ফরমিক এসিডের মোট শুল্কহার ৩৭% এবং সালফিউরিক এসিডের শুল্কহার ৭৮%। ঘোষণা বহিভুত পণ্য আমদানি ও শুল্ক ফাঁকির প্রবণতা থাকায় পণ্য চালানটি আটক করা হয়েছে।
সিএন্ডএফ এজেন্ট মোশারফ টেডার্সের স্বত্বাধিকারী মোশারফ হোসেন জানান, আমার আমদানিকারক ফরমিক এসিড আমদানি করেছেন। পণ্য চালানটি বেনাপোলে বন্দরে প্রবেশ করার পরে কাস্টমস সেটা ল্যাবে পরীক্ষা করে ফরমিক এসিডের পরিবর্তে সালফিউরিক এসিড পেয়েছেন।
বেনাপোল কাস্টমস হাউজের কমিশনার আব্দুল হাকিম জানান, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের তথ্যের ভিত্তিতে ঘোষণা বহিভুত ১৫ টন ৭৫০ কেজি সালফিউরিক এসিড আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামের রিফ লেদার লিমিটেড নামে এক আমদানিকারক ফর্মিক এসিড ঘোষণা দিয়ে পণ্য আমদানি করেন। পণ্যটি বেনাপোল বন্দরে আসার পর ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়। ল্যাব পরীক্ষা রিপোর্টে ফরমিক এসিডের স্থলে সালফিউরিক এসিড পাওয়া গেছে।
সালফিউরিক এসিড আমদানি করতে হলে এলসি খোলার আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বিস্ফোরক অধিদফতরের অনুমতি প্রয়োজন হয়। কোনো অনুমোদন তিনি নেননি আমদানি করার পূর্বে। এটা একটা বড় ধরনের অপরাধ।
স্বাআলো/এস