যশোরের খামারে ঝুলছে বিশ্বের সবচেয়ে দামি ‘সূর্যডিম’ আম

| April 20, 2025

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাপানের বিখ্যাত এবং বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম হিসেবে পরিচিত ‘সূর্যডিম’ বা মিয়াজাকি এখন ঝুলছে যশোরের অভয়নগর উপজেলার একটি খামারে। বিরল প্রজাতির এই আমের চাষে সাফল্য পেয়ে উচ্ছ্বসিত খামারের মালিক আসাদুর রহমান।

অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের ডুমুরতলা গ্রামে সরখোলা-মশিয়াহাটী সড়কের পাশে অবস্থিত ‘দারুল আসাদ খামারবাড়ি’। এই খামারেই দেখা মিলবে লাল রঙের মনকাড়া মিয়াজাকি আমের। খামারের মালিক আসাদুর রহমান একই উপজেলার গুয়াখোলা গ্রামের প্রয়াত সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

দুইটি মাছের ঘেরের মাঝখানের উঁচু জায়গায় (আইলে) সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে মিয়াজাকি আমের গাছ। গাছগুলো আকারে খুব বড় না হলেও, প্রায় প্রতিটি গাছের বোঁটায় বোঁটায় ঝুলছে রঙিন সূর্যডিম আম।

খামারের মালিক আসাদুর রহমান জানান, পত্রপত্রিকায় বিশ্বের সবচেয়ে দামি এই আম সম্পর্কে জানার পর তিনি বাণিজ্যিকভাবে এটি চাষের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে ভারত থেকে ৬৫টি চারা আমদানি করেন, যার প্রতিটির খরচ পড়েছিলো চার হাজার ২০০ টাকা। বর্তমানে তার খামারের ২৩টি গাছে আম ধরেছে এবং বাকি গাছগুলোতেও ফলন আসতে শুরু করেছে। তিনি আশা করছেন, চলতি মৌসুমেই প্রতি কেজি এক হাজার টাকা দরে অন্তত পাঁচ লাখ টাকার আম বিক্রি করতে পারবেন।

জানা গেছে, জাপানের মিয়াজাকি অঞ্চলের নামে নামকরণ হওয়া এই আম স্বাদে-গন্ধে ও মিষ্টতায় অন্যান্য আমের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। এর ব্যতিক্রমী লাল রঙ এবং প্রায় এক কেজি পর্যন্ত ওজন হতে পারাটাও এর বিশেষত্ব। তবে বিশ্বজুড়ে এর পরিচিতির মূল কারণ হলো এর আকাশছোঁয়া দাম, যা এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান আমের তকমা দিয়েছে। জাপানি ভাষায় ‘তাইয়ো নো তামাগো’ নামে পরিচিত এই আমের অর্থ ‘সূর্যের ডিম’, যা এর আকৃতি ও রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আন্তর্জাতিক বাজারে এটি ‘লাল আম’ নামেও পরিচিত।

অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লাভলী খাতুন বলেন, যশোর জেলার মধ্যে আসাদুর রহমানই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে মিয়াজাকি আমের চাষ শুরু করেছেন। আমি নিজে তার খামার পরিদর্শন করেছি। গাছগুলোতে খুব ভালো ফলন হয়েছে। আমরা আশা করছি তিনি সফল হবেন।

তিনি আরো জানান, এ ধরনের নতুন এবং সম্ভাবনাময় উদ্যোগের ক্ষেত্রে কৃষি অফিস থেকে কারিগরি পরামর্শসহ সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

স্বাআলো/এস