জালিয়াত শিক্ষকরা শিক্ষাদানের অযোগ্য

পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতর (ডিআইএ) ২০২২ সালের এপ্রিল ও জুন মাসে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা করে এই তথ্য পেয়েছে। এই অবৈধ নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার সরকারি অংশ সরকারি কোষাগারে এবং নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের গ্রহণ করা বেতন-ভাতা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ফান্ডে ফেরত নেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।

গত ১৬ অক্টোবর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা প্রতিবেদনটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে ডিআইএ। কারচুপির মাধ্যমে এসব নিয়োগ দেয়া হয়েছে। কারচুপি বা জালিয়াতির মাধ্যমে যারা শিক্ষকতার চাকরি নিয়েছেন তাদের কেউ রেহাই পাবে না।

ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এই শ্রেণির শিক্ষক আছে বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। সরকারিভাবে তাদেরকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

যারা কারচুপি বা জালিয়াতির মাধ্যমে শিক্ষকতার চাকরি নিয়েছে তারা সন্দেহাতীতভাবে অযোগ্য। পরীক্ষা দিয়ে পাস করার যোগ্যতা বা মেধা নেই বলে জালিয়াতির আশ্রয় নেয়।

একজন শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ জীবনে কী হবে, সেটা শিক্ষার প্রভাবের মাধ্যমেই তার শিক্ষক ঠিক করে দেন। শিক্ষকরা বিভিন্ন স্তরে শিক্ষা দিয়ে থাকেন।

প্রাথমিকের শিক্ষকরা একভাবে শিক্ষা দেন, মাধ্যমিকের শিক্ষকরা একভাবে শিক্ষা দেন এবং কলেজের শিক্ষকরা একভাবে শিক্ষা দেন। একজন শিক্ষার্থীর লক্ষ্য, আদর্শ, চরিত্র, চিন্তাচেতনা পরিবর্তনের ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের থাকে না। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষকরাই শিক্ষার্থীদের আগামী দিনের পথ দেখায়। যে শিক্ষকের মনমানসিকতা ধারণ করেন, তার ছাত্র কখনো বিচ্যুৎ হতে পারে না, খারাপ হতে পারে না। বলতে দ্বিধা নেই আজকাল শিক্ষকরা শিক্ষকের মানসিকতা নিয়ে শিক্ষকতা করেন না। তারা আর ১০টি চাকরির মতো চাকরি করেন। তাদের বোঝা উচিত শিক্ষার্থীদের পেছনে শিক্ষকের ভূমিকার কারণে তারা ভবিষ্যতের সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পথ পায়।

শৈলকূপার শিক্ষক নামের দুইজন জাল সনদ দিয়ে চাকরি নিয়ে যে কাজটি করলেন তা যে কতো নিন্দনীয় তা ভাষায় বর্ণনা করা সহজ নয়। তারা চৌর্যবৃত্তির আশ্রয় নিয়ে শিক্ষকতা পেশায় ঢুকে শিক্ষার্থীদের কি শেখাবেন এটা আজ প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।

শিক্ষা আজ বাণিজ্যিকরণ হয়ে গেছে। শিক্ষকরা তাদের মেধা শিক্ষার্থীদের ভেতর বিতরণ করছেন না। তারা টাকার বিনিময়ে বিক্রি করছেন। আর যাদের টাকা আছে তারা টাকা দিয়ে এই মেধা কিনে উচ্চ শিক্ষিত হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু সুশিক্ষিত হচ্ছে না। জাতির ভবিষ্যৎ আজকের শিক্ষার্থীরা যদি সুশিক্ষিত হয়ে গড়ে না ওঠে তাহলে তারা সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারবে না। টাকা উপার্জন করে তারা পারিবারিকভাবে বিত্তবান হলেও তা দেশ ও জাতির কল্যাণে আসবে না।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

ইউএনওর নম্বর ক্লোন করে শিক্ষকের কাছে টাকা দাবি

জেলা প্রতিনিধি, নোয়াখালী: জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও)...

দেশে বেকার বেড়ে ২৬ লাখ ৬০ হাজার, বাড়বে আরো

দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়ে এখন ২৬ লাখ ৬০ হাজার।...

নড়াইলে ট্রাক-পিকআপ সংঘর্ষে চালক নিহত, আহত ৪

জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল: জেলার সদর উপজেলায় পিকআপ ও ট্রাকের...

উষ্ণভাব আরো দুই-তিন দিন, বৃহস্পতিবার থেকে শৈত্যপ্রবাহ

কুয়াশার ঘনত্ব কমে সূর্যের দেখা মেলায় রোববার তাপমাত্রা বেড়েছে...