সম্পাদকীয়: আইন আছে প্রয়োগ নেই। দেশের স্বার্থে, মানুষের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে আইন প্রণীত হয়। কিন্তু সেই আইনের যদি প্রয়োগ না হয় তা হলে আইন প্রণয়ন করে লাভটা হলো কি? আইন আছে গ্রামীণ সড়কে ভারী যানবাহন চলতে পারবে না, কিন্তু চলছে এবং কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো যারা চালাচ্ছে তারা গলার স্বর উচ্চে তুলে বলছে রাস্তা তো যানবাহন চলার জন্য, গাড়ি চলবে।
এই আইন ভাঙার কারণে যে কি জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে তা গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ফুটে উঠছে। প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে আইন না মানায় পাকা রাস্তা কাদায় পরিণত হয়ে মরণ ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। রাস্তায় মাটি বহনকারী ভারী ট্রাক্টর চলাচল করায় মাটি পড়ে রাস্তায় পুরো আবরণের সৃষ্টি হয়েছে।
বৃষ্টি হওয়ায় ওই মাটি কাদায় পরিণত হয়ে পাকা রাস্তা কাচা রাস্তার রূপ নিয়েছে। চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পিছলে পড়ে মানুষজন আহতও হচ্ছে।
শুধু এ অভিযোগ তুলে কি হবে? কোনো জায়গায় তো আইনের প্রয়োগ হচ্ছে না। এই যেমন আইন আছে জনবহুল স্থানে প্রকাশ্যে ধুমপান করা যাবে না, ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তায় চলতে পারবে না, আবাদি জমির টপ সয়েল কাটা যাবে না, লোকালয় থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ইট ভাটা করতে হবে, সিনিয়র নাগারিকদের মর্যাদা দিতে হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গাইড বা নোট বই পড়ানো যাবে না, নদী লিজ নেয়া যাবে, কিন্তু শ্রোতধারা বন্ধ করা যাবে না, কিন্তু প্রশাসনের নাকের ডগায় সব কিছু চলছে। যারা বলার তারা কিছুই বলছে না।
ছোট ছোট বালুকণা মিলেই কিন্তু বিশাল মরুভূমির সৃষ্টি। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পানি মিলেই সৃষ্টি মহাসাগর। আইন না মানার উল্লেখিত বিষয়গুলো হতে পারে ছোট বিষয়। কিন্তু আমরা বলবো আসলে ছোট বিষয় নয়। কারণ ছোট বিষয় হলে আইন প্রণয়ন হতো না।
ছোট হোক বড় হোক জনস্বার্থে বিষয়গুলোর দিকে নজর দেয়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের একান্ত জরুরী। আইন অমান্য করে আমরা কোনোক্রমেই নিজেদেরকে সভ্য জাতি দাবি করতে পারিনে। আমরা আশা করবো জাতীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে আইন প্রয়োগ হোক।
আমরা আইন মান্যকারী সভ্য জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াই।
স্বাআলো/এস/বি