ঘূর্ণিঝড় রেমাল: তলিয়ে গেছে সুন্দরবন, উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

আজাদুল হক, বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’। ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে মোংলা বন্দরসহ সুন্দরবন উপকূলে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জারি করা হয়েছে।

সমুদ্রবন্দর মোংলা থেকে মাত্র ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়টি। এরই মধ্যে দমকা বাতাসসহ থেমে থেমে বৃষ্টি শুরু হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে গেছে পুরো সুন্দরবন। রবিবার (২৬ মে) মোংলা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ ও পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আঘাত হানতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’

করমজল বন্যপ্রাণী প্রজননকেন্দ্র ও পর্যটন স্পটের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির রবিবার (২৬ মে) বলেন, ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে চার থেকে সাড়ে চার ফুট পানি বেড়ে সুন্দরবন তলিয়ে গেছে। রাতে পানির চাপ আরো বাড়বে। তবে প্রজননকেন্দ্রের বণ্যপ্রাণীর ক্ষয়-ক্ষতির কোনো আশঙ্কা নেই।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ নূরুল করিম জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে সম্ভাব্য ক্ষয়-ক্ষতি এড়াতে পুরো সুন্দরবন বিভাগের কর্মকর্তা ও বনরক্ষীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বন বিভাগের ঝুঁকিপূর্ণ ক্যাম্পগুলোতে থাকা বনরক্ষীদের এরই মধ্যে নিরাপদে সরিয়ে আনা হয়েছে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের মোংলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ইনচার্জ হারুন অর রশিদ জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি সন্ধ্যা নাগাদ সুন্দরবন ও মোংলা উপকূল অতিক্রম করে পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ দিকে মোংলা বন্দর কতৃপক্ষ ঘূর্ণিঝড় রেমাল মোকাবেলায় সকল ধরনের প্রস্তুুতি নিয়ে রবিবার আবারো জরুরি সভা করেছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে রেড অ্যালার্ট জারি

অপরদিকে তীব্র জলোচ্ছাসের পানিতে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের ১০০ বস্তা সরকারি চাল পানিতে ডুবে নষ্ট হয়েছে।

রবিবার দুপুরে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের গোডাউনে পানি ঢুকে ওই চাল নষ্ট হয়েছে।

খাউলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাস্টার সাইদুর রহমান চাল নষ্ট হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গোডাউনে ইউনিয়নের ৫১৯ জন মৎস্যজীবীদের জন্য বরাদ্ধের এক হাজার ৩৮৪ বস্তা চাল ছিলো। হঠাৎ করে ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পেয়ে এ ক্ষতি হয়েছে। বর্তমানে বাকি চাল গোডাউন থেকে সরিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ও একটি মসজিদে রাখা হয়েছে।

স্বাআলো/এস