সম্পাদকীয়: যশোর শহরের দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ভুল অপারেশনে ডলি খাতুন (৩০) নামে এক প্রসূতির জীবন সংকটাপন্ন। এই প্রতিষ্ঠানে ইএনটি বিভাগের একজন ডাক্তার গাইনি বিদ্যায় বিশেষজ্ঞ না হয়েও তিনি ডলি খাতুনের সিজারিয়ান অপারেশন করতে গিয়ে খাদ্যনালী ও প্রাবেরনালী একসাথে সেলাই করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৭ জুলাই যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের গেটের সামনে দেশ ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে রোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
ঢাকার চিকিৎসকের মাধ্যমে ভুল অপারেশনের বিষয় জানতে পেরে স্বজনরা দেশ ক্লিনিকে বিষয়টি জানতে গেলে শুরু হয় গোলযোগ। পরে পুলিশঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।দেশে হাসপাতাল ব্যবসা এখন বড় ধরনের প্রতারণার ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। এমন কোনো ব্যবসা নেই যে জায়গায় স্বচ্ছতা আছে। সব কিছু যখন ফ্রি-স্টাইলে চলছে তখন প্রতারণাতে আর ভয় কিসের? আর তাই মনে হয় নির্ভয়ে এ ব্যবসাটা চালিয়ে যাচ্ছে প্রতারকরা। এ ব্যবসায় যা চলছে তা কোনো সভ্য সমাজে চলতে পারে না। আমরা আগেও এ ব্যবসার চিত্র তুলে ধরেছি। প্রশ্ন জাগে কেন এ সব অনিয়ম ও আইনবিরোধী কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয় না? কর্তৃপক্ষের নির্লিপ্ততার ফলে অপরাধীরা অপরাধ করার সুযোগ পায় এবং তারা অপরাধে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে।
আমরা সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানাবো আনাচে কানাচে বেঙের ছাতার মতো হাসপাতাল/ক্লিনিক নামের যে প্রতারণার মূলক প্রতিষ্ঠান গজিয়ে উঠেছে তার দিকে নজর দিতে হবে। এসব ক্লিনিকে অভিজ্ঞ নার্স তো নেই, ডাক্তারও থাকে না। দেখা যায় সেখানে বিষয়ভিত্তিক ডাক্তার না থাকায় বিপদের সময় অর্থাৎ জরুরী মুহূর্তে রোগী নিয়ে ছুটতে হয় অন্য হাসপাতাল বা ক্লিনিকে। ফ্রিস্টাইলে সিজারিয়ান অপারেশন করার পর সদ্য ভুমিষ্ঠ সন্তানের চিকিৎসার প্রয়োজনে শিশু ডাক্তার পাওয়া যায় না। তখন অভিভাবকদের নিজে দায়িত্বে ছুটতে হয় শিশু ডাক্তারের কাছে। সমস্যা দেখা দেয়ায় তার স্বজনদের দৌড়াদৌড়ি করতে হচ্ছে দেশের বিভিন্ধস হাসপাতালে। এ ভাবে ফ্রিস্টাইলে চলার জন্য এক সাগর রক্তের বিনিময়ে দেশটা স্বাধীন হয়নি।
স্বাআলো/এস/বি