নোয়াখালীর চাটখিলে সিংবাহুড়া গ্রামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের জন্য পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত ২২ নভেম্বর দিনগত রাতে পুলিশ ওই গৃহবধূর স্বামীর বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে। নিহত গৃহবধূর নাম ফাতেমা আক্তার মরিয়ম ওরপে অর্পিতা (১৭)। তিনি সিংবাহুড়া গ্রামের ইতালী প্রবাসী রাইসুল ইসলাম রুবেলের স্ত্রী।
গত ২ ফেব্রুয়ারি পারিবারিকভাবে ১০ লাখ টাকা দেনমোহরে অর্পিতার বিয়ে হয়। বিয়ের পর তার স্বামী ইতালী চলে যান। গত দুই মাস আগে তার শ্বশুর-শ্বাশুড়ি অর্পিতাকে ইতালী নিয়ে যাওয়ার জন্য তার জাতীয় পরিচয়পত্রের বয়স সংশোধন করে এবং ইতালী যাওয়ার জন্য ২০ লাখ টাকা তার বাবার বাড়ি থেকে এনে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। কিন্তু অর্পিতার বাবা কৃষি কাজ করার কারণে ২০ লাখ টাকা দেয়া সম্ভব হয় নি। এ নিয়ে অর্পিতার শাশুড়ি রহিমা বেগম (৫০) ও তার ননদ ফারহানা প্রতিনিয়ত তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতে শুরু করে।
গত ২২ নভেম্বর অর্পিতার শাশুড়ি তার বাবার বাড়ি টাকার জন্য পাঠায়। সে তার বাবার বাড়ি গিয়ে টাকা ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য কান্নাকাটি করে। কয়েক দিনের মধ্যে টাকা ব্যবস্থা করে দেয়ার আশ্বাস দিলে অর্পিতা শ্বশুর বাড়ি চলে আসে। এ নিয়ে শাশুড়ির সাথে অর্পিতার কথা কাটাকাটি হয়। ওই ঘটনার জের ধরে ২২ নভেম্বর দিনগত মধ্যরাতে অর্পিতার শাশুড়ি রহিমা বেগম (৫০), ননদ ফারহানা (৩০) তার স্বামী (ঘরজামাই) ফরিদ তাকে এলোপাতাড়ী মারধর, কিলঘুষি ও লাথি মেরে হত্যা শেষে মরদেহ বাথরুমে ফেলে রেখে অর্পিতা আত্মহত্যা করেছে বলে বাবার বাড়ি খবর দেয়।
যৌতুকের জন্য নারী নির্যাতনের ঘটনা এ সমাজে অহরহ ঘটছে। কিন্তু প্রতিকারের কোনো স্থায়ী পথ বেরুচ্ছে না। নৈতিকতার অভাব হলে মানুষ নামধারীরা জানোয়ারই হয়। তাদেরই হাতে নির্যাতিত হবে নারী, নির্যাতিত হবে অগণিত মা-বোন।
মানুষ কত বিবেকহীন হলে এমন কাজটি করতে পারে। আসলে এটা তার খাছিলত। অসীম চাহিদা নিয়ে সব কিছুতে অতৃপ্ত থাকেন। কথায় আছে ‘যে অল্পে তুষ্ট সেই সুখী’। অর্পিতার শাশুড়ি ও ননদ অল্পে তুষ্ট হবার মানুষ নয়। আসলে ‘খাছিলত যায় মরলে’ প্রবাদ কথাটিই সত্য। আলোচিত ওরা না মরা পর্যন্ত তার খাছিলত যাবে না। সরকারের উচিত এসব যৌতুক লোভীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।