সম্পাদকীয়

খাল দখলের কারণে খাদ্য উৎপাদন কমছে

| February 4, 2024

সম্পাদকীয়: বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে ঢুলিগাতি গ্রামের সরকারি খাল দখল করে মাছ চাষ করছেন প্রভাবশালীরা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে কোনো মাথাব্যথা নেই। খালটি রক্ষায় নজরদারিও করেনি। খাল দখল হয়ে যাওয়ায় প্রায় ১০০ একর ফসলি জমির আবাদ নিয়ে নানা সংকটে পড়েছেন কৃষকরা।

গণমমাধ্যমের খবরে প্রকাশ, মোড়েলগঞ্জের ঢুলিগাতি গ্রামে দুই কিলোমিটার দৈর্ঘের একটি খাল ছিলো। কিছু অসাধু ব্যক্তি সেটি দখলে নিয়েছে। খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁধ দিয়ে মাছের ঘের তৈরি করে বছরের পর বছর ধরে তারা মাছ চাষ করছে। খালে বাঁধ দেয়ার ফলে বর্ষা এলেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। এতে আশপাশের ফসলি জমিগুলো পানির নিচে তলিয়ে যায়। ফসল হারিয়ে কৃষকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। খালটি দখলমুক্ত করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।

খালের বুকে এখন একাধিক বাঁধ। ফলে এর পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ফসল উৎপাদনও কমে গেছে কৃষকের। তারা আগে বিঘাপ্রতি জমিতে ধান পেতেন ৩০ থেকে ৩৫ মণ। এখন পান ১০ থেকে ১২ মণ।

জলাধার সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী জলাশয়, পুকুর, খাল-বিল, ঝিরি-ঝরনা, লেক ভরাট করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনেও নিষিদ্ধ। আইন আছে ঠিকই কিন্তু সেটার প্রয়োগ চোখে পড়ার মতো নয়। সঠিকভাবে যদি আইন প্রয়োগ হতো তাহলে প্রাচীনকালের প্রবাহমান খালটি প্রশাসনের চোখের সামনে এভাবে দখল হয়ে যেতো না। প্রশাসন এক্ষেত্রে কেনো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে সে প্রশ্ন এসে যায়।

শুধু মোড়েলগঞ্জ উপজেলায়ই খাল দখল নিয়ে মাছ চাষ করছে তা নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায় এসব অপকর্ম চলে প্রশাসনের নাকের ডগায়। আর এসব অপকর্ম চালিয়ে যাওয়ার পেছনে প্রশাসনের কিছু অসাধু ব্যক্তিরও ইন্ধন থাকে।

২০২৪ সালে ডেল্টা প্ল্যান অনুযায়ী সরকারিভাবে খাল পুনর্খননের পরিকল্পনা রয়েছে। বেদখলকৃত খালের জমি উদ্ধার ও খাল পুনর্খনন পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বাস্তবায়ন করবে। মোরেলগঞ্জে ঢুলিগাতি গ্রামের সরকারি খালটি দখলমুক্ত করার সব রকম ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষের নিতে হবে। পাশাপাশি সরকারি খাল দখলের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করতে হবে। যারা এসব অপকর্ম করেছে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। কৃষকরা খালের পানি ফিরে পেয়ে আবার তাদের জমিগুলো আবাদ করতে পারছেন এটা আমরা দেখতে চাই।

স্বাআলো/এস

Shadhin Alo