গাছে গাছে আমের মুকুল, মৌ মৌ গন্ধে মাতোয়ারা চারদিক

প্রদীপ রায় জিতু, বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে শীত বিদায়ের লগ্নে প্রকৃতি বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবুজ পাতার ফাঁকে এখন আমের সোনালি মুকুলের ছড়াছড়ি। উপজেলার চারপাশ জুড়েই মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ।

ইতোমধ্যে বিভিন্ন বালাইনাশক স্প্রে করার পাশাপাশি ব্যস্ত হয়ে উঠেছে গাছের পরিচর্যায় বাগান চাষীরা।

শীতের ভরা মৌসুম। ফাল্গুন মাসের হিমেল হওয়ায় সবুজ পাতার ফাঁকে দোল খায় মুকুল।

অথচ এর মধ্যেই বীরগঞ্জ উপজেলায় অনেক আম গাছে মুকুলের দেখা মিলছে। যে দিকে তাকাই দেখা যায় আমের মুকুলের আভা। গাছে গাছে দৃশ্যমান আমের মুকুল। মুকুলের ভারে নুয়ে পরার উপক্রম প্রতিটি গাছ। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই বারো মাসি ও দেশি জাতের আম গাছে এই মুকুল দেখা দেয়। ফুলের সমরোহ মিলেছে প্রকৃতি সাজে। সারি বদ্ধ গাছে ভরপুর আমের মুকুল যেনো শোভা ছড়াচ্ছে নিজস্ব মহিমায়। বাতাশে মিশে গেছে মৌ মৌ গন্ধ যে গন্ধ মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধু মাসের আগমনি বার্তা জানান দেয় আমের মুকুল।

আম চাষী ও বাগান মালিকরা জানান, উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা জুড়ে শীতের তীব্রতা বিরাজ করলেও আগাম জাতের সব আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। পৌষের মাঝামাঝিতেই গাছে মুকুল আসার লক্ষণ দেখা গিয়েছিলো। মাঘের শুরুতেই মুকুল বের
হয়েছে, এ কারণে বাগানে পরিচর্যা বাড়িয়েছেন।

সারাদেশে রয়েছে ২৫০ জাতের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ফজলি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, ন্যাংড়া, ক্ষিরসাপাত, হিমসাগর, কৃষাণভোগ, মল্লিকা, লক্ষণা, আম্রপলি, দুধসর, দুধকলম, বিন্দাবনী, আরজান, রাণী পসন, মিশ্রীদানা, সিঁন্দুরী, আশ্বিনাসহ নানা প্রকার গুটি আম। ডিসেম্বরের শেষ দিক থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় অবধি বারো মাসি বা লোকাল জাতের আম গাছে মুকুল আসা দেখা যায়। ফেব্রয়ারি মাসেই মূলত আম গাছে মুকুল আসা শুরু হয়। শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ও ঘন কুয়াশার কারণে গাছের মুকুল নষ্ট হতে পারে। প্রস্তুতি নিচ্ছে আম ভালোবাসি মানুষ ও আম চাষীরা।

আম চাষী আরো জানান, বড় ধরনের কোনো প্রকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহওয়া অনুকুল থাকলে এ উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে। ঘন কুয়াশার কবলে না পড়লে, এসব মুকুলে ভালো আম হবে। তবে নিয়ম মেনে মাঘের শেষ দিকে যেসব গাছে মুকুল আসে, তাতে আরো বেশি ফলন হয় বলে আশা করা যায়।

বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম বলেন, বীরগঞ্জ উপজেলায় আম গাছগুলো মুকুল আসতে শুরু করেছে। চলতি আম মৌসুমে এবার উপজেলায় ৩১৭ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। বাগানের সংখ্যা ৪৯৫টি। এছাড়াও উপজেলার প্রায় বাড়িসহ বিভিন্ন স্থানে আমের গাছ রয়েছে। প্রায় গাছে আমের মুকুল এসেছে। আমরা আম বাগান চাষীসহ বসতবাড়িতে থাকা আম গাছ মালিকদের সেবা দিয়ে আসছি। এছাড়াও গাছের যত্ন নেয়ার বিষয়ে পরামর্শ দেয়া শুরু করেছি। আম চাষীদের যাতে আমের ভাল ফলন হয় সেই জন্য কৃষি অধিদফতর থেকে তাদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৬০ জন আম চাষীকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়েছে।

স্বাআলো/এস

Share post:

Subscribe

spot_imgspot_img

Popular

More like this
Related

টোলপ্লাজায় নিহত ৬: সেই বাস চালক গ্রেফতার

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বেপরোয়া গতির বাসের ধাক্কায়...

পটুয়াখালীতে বিজয় দিবস উপলক্ষে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মাননা

জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: মহান ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস উপলক্ষে...

কেউ যেনো মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খেতে না পারে: জামায়াতে আমির

ছাত্রদের স্যালুট জানানোর ইচ্ছা পোষণ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর...

নড়াইলে ইউপি সদস্যকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের পর মুখে বিষ ঢেলে হত্যা

নড়াইলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় এক নারী (৫০) ইউপি সদস্যের মৃত্যু...