সম্পাদকীয়: নিপাহ ভাইরাস কেড়ে নিলো বরিশালের বানারীপাড়ার তিন বছরের ফুটফুটে নিষ্পাপ শিশু তহুরার প্রাণ। প্রায় এক মাস মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ১৮ ফেব্রুয়ারি জীবন প্রদীপ নিভে যায় তার।
তহুরা বানারীপাড়া উপজেলার আহম্মদাবাদ বেতাল গ্রামের ইমাম হোসেন সান্টুর মেয়ে।
তহুরা বাড়িতে বসে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার সপ্তাহ খানেক পরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা দিয়েও তাকে সুস্থ করা
যায়নি।
নিপাহভাইরাসে ২০২৩ সালে সর্বোচ্চ ১৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। যাদের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন। রোগতত্ত্ব রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এ তথ্য জানায় । ২০০১ সালে প্রথম দেশে নিপাহভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। ভাইরাসজনিত এ রোগ সারাদেশের ৩৪টি জেলায় ছড়িয়েছে। রোগটিতে এখনো পর্যন্ত ৩৩৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২৪০ জন।
নিপাহ ভাইরাস কেড়ে নিলো শিশু তহুরার প্রাণ
অর্থাৎ আক্রান্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার শতকরা ৭১ শতাংশ। মৃত্যুহার বিবেচনা যা অত্যন্ত শঙ্কাজনক। ২০২৩ সাল পর্যন্ত মোট ১৪ জন নিপাহভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। যাদের মধ্যে ১০ জন মারা গেছেন। খেজুরের কাঁচা রস পান করলে, পাখি খাওয়া ফল খেলে এই রোগ হয়। বিশেষ করে বাদুড় এই ভাইরাস বহন করে। বাদুড় খেজুরের রস পান করার পর সেটি মানুষ পান করলে মানুষের শরীরে সেই ভাইরাসটি ঢুকে যায়। অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শে সুস্থ মানুষ আসলেও নিপাহভাইরাস ছড়ায়। তখন মাল্টিপল রোগী হয়ে যায়, দ্রুত ছড়ায়। এটা আমাদের আশঙ্কার বিষয়। নিপাহ ভাইরাসের কোনো টিকা নেই। কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসাও নেই। আর বিপদটা এখানেই। সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকার কারণেই রোগটি প্রাণঘাতী রূপ ধারণ করতে পারে। এজন্যে রোগ প্রতিকারের চেয়ে রোগ প্রতিরোধই শ্রেয়।
নিপাহ ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে হলে মানুষকে সচেতন হতে হবে। সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন করতে হবে। শীত মৌসুম এলেই নিয়মিত প্রচার চালাতে হবে। কেনো না এই মৌসুমেই নিপাহ ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেয়।
স্বাআলো/এস