নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরকৈলাশ গ্রামে একটি পুকুরে কুমিরের অস্তিত্ব রয়েছে—এমন গুজবে চার দিন ধরে এলাকাজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন তৈরি হয়েছে। ফেসবুক লাইভ, ছবি ও ভিডিও শেয়ারে দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আলোচনার বিষয়টি। তবে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বন বিভাগের অভিযানে কুমিরের অস্তিত্বের কোনো প্রমাণ মেলেনি।
ঘটনার সূত্রপাত রোববার বিকেলে ফেরি ওয়ালাদের বাড়ির বেলালের মেয়ে কুমির সদৃশ একটি প্রাণী দেখতে পাওয়ার দাবি করার পর। বুধবার বিকেলেও একই ধরনের একটি প্রাণী পুকুরে ভাসতে দেখেন বলে দাবি করেন বাড়ির গৃহবধূ নাহিদা আক্তার পান্না। এতে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। হাজারো উৎসুক জনতা পুকুরপাড়ে ভিড় করেন, কেউ কেউ মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।
পুকুরের মালিক মাসুদুল ইসলাম শরীফ বলেন, “আমার স্ত্রী প্রথম প্রাণীটি দেখতে পাওয়ার পর ব্যাপক ভিড় শুরু হয়। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত প্রাণীটি আর দেখা যায়নি। বন বিভাগের লোকজনও পুকুরে জাল ফেলে কিছুই পাননি।”
বন বিভাগের হাতিয়া বিট কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম বলেন, “সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো একটি স্থিরচিত্র দেখে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, সেটি কুমির নয় বরং একটি রামগুই (গুইসাপ)। ছবিটি আগে দেখলে এতটা বিভ্রান্তি তৈরি হতো না। আলো স্বল্পতার কারণে আমরা প্রথমে নিশ্চিত হতে পারিনি। তাছাড়া, এত বড় আকৃতির রামগুই সচরাচর দেখা যায় না বলেই বিষয়টি ঘোলাটে হয়েছে।”
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন, “বন বিভাগ পুকুরে অভিযান চালিয়ে কিছুই পায়নি। কুমির থাকার কোনো প্রমাণ মেলেনি। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির ভিত্তিতে ধারণা করা হচ্ছে, সেটি কুমির নয় বরং রামগুই ছিল।”
স্থানীয়রা জানান, গুজব ছড়িয়ে পড়ায় হাজার হাজার মানুষ পুকুরে ভিড় করেন। এখন প্রাণীটি না পাওয়ায় অনেকেই হতাশ হয়ে পড়েছেন, আবার কেউ কেউ বিষয়টিকে সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ও গুজব বলেও মন্তব্য করছেন।