জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী: মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য ভাষা শহীদদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকে স্মরণ করে আগামীকাল বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হবে।
১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায়, বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হবে।ভাষা আন্দোলনের সেই বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবছর ঢাকা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের আদলে পটুয়াখালী জেলার শেখ রাসেল শিশু পার্ক সংলগ্ন ঝাউতলা মাঠের স্বাধীনতা চত্ত্বরে খালি পায়ে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গাইতে গাইতে ফুল নিয়ে সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা জানাবে রাত ১২:০১ মিনিটে। দিবসটি উপলক্ষে দুইদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি ২০ তারিখ বেলা ১২টায় শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ছড়া ও কবিতা পাঠের প্রতিযোগিতা হয় শিশু একাডেমিতে।
রাত ১২:০১ মিনিটে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্বাধীনতা চত্ত্বর এ পুষ্পস্তবক অর্পণ শহীদ মিনারে। ফেব্রুয়ারি ২১ সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে অর্ধনমিত রাখা হবে। সুবিধাজনক সময়ে ভাষা শহিদদের রুহের মাগফেরাতের জন্য মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে দোয়া ও প্রার্থনা করা হবে।
বিকাল ০৩:৩০ মিনিটে ১০ দিনব্যাপী একুশে বইমেলার শুভ উদ্বোধন করা হবে ডিসি স্কয়ার মাঠে। বিকাল ০৪:৩০ মিনিট ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে আলোচনা সভা। বিকাল ০৫:৩০ মিনিট শিশুদের চিত্রাঙ্কন, ছড়া ও কবিতা পাঠ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ১০ দিন ব্যাপী (সন্ধ্যা ০৬:০০টা হতে রাত ৮:০০টা পর্যন্ত) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করতে হবে
জেলা প্রশাসক নুর কুতুবুল আলম বলেন, বাঙালি জাতির ইতিহাসে ভাষা আন্দোলন অত্যুজ্জ্বল এক গৌরবময় অধ্যায়। বাঙালির জাতীয় চেতনা সুসংহত করা, বাঙালি সংস্কৃতির স্বকীয়তা শনাক্ত করা, সর্বোপরি বাঙালিকে আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধানে কৌতুহলী করে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এই জাতির স্বাধীনতা অর্জন, এই সবকিছুরই বীজ বপিত হয়েছে ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে ভাষার জন্য রক্তদানের মধ্য দিয়ে। ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করার ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রয়েছে অসামান্য অবদান। আজন্ম মাতৃভাষাপ্রেমী বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনের সূচনাপর্ব থেকে শেষ পর্যন্ত ছিলেন সক্রিয়। ভাষা আন্দোলনে শুধু বাঙালির ভাষার দাবিই অর্জন হয়নি, বরং এটি সারা বিশ্বের সকল নাগরিকের সত্য ও ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রেরণার উৎস।
তিনি আরো বলেন, জেলা প্রশাসন প্রথমে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। তারপর সাধারণ মানুষের জন্য এটি উন্মুক্ত করা হবে।
অন্যদিকে পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ সাইদুল ইসলাম জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব প্রস্ততি নেয়া হয়েছে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে এলাকাটি পর্যবেক্ষণ করা হবে।
স্বাআলো/এস