নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে সালমা আক্তার নামে এক গৃহবধূ হত্যার ঘটনায় মামলা নেয়নি থানা পুলিশ। বাধ্য হয়ে নিহতের মা ফিরোজা বেগম সাতজনের নামে আদালতে অভিযোগ করেন।
বিচারকের নির্দেশে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) নিয়মিত মামলাটি রেকর্ড করেছে কোতোয়ালী থানা পুলিশ।
মামলার বাদী নিহতের মা ফিরোজা বেগম সদর উপজেলার নরেন্দ্রপুর গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।
বর্তমানে তিনি অভয়নগর উপজেলার মশরহাটি গ্রামে বসবাস করেন।
আসামিরা হলো, সদর উপজেলার বানিয়ারগাতি গ্রামের ইসমাইল হোসেন মােল্যা, তার স্ত্রী পাতাসি বেগম, চার ছেলে আমির হামজা, জহির, পান্না, রুবেল ও মিলনের স্ত্রী মনিহার বেগম।
যশোরে ইয়াবা-ফেনসিডিল ও গাঁজাসহ ৭ মাদক ব্যবসায়ী আটক
বাদী মামলায় বলেছেন, মেয়ের সালমার বয়স দেড় বছর হলে তার পিতা মারা যান। এরপরে বাদী অতিকষ্টে জুট মিলে কাজ করে মেয়েকে লালন-পালন ও নিজের জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ২০১৫ সালের ১৯ জুলাই আসামি আমির হামজার সাথে সালমার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে সাত বছরের তাদের একটি মেয়ের জন্ম হয়। বর্তমানে মেয়েটির বয়স সাত বছর।
বিয়ের পর থেকে বিভিন্ন সময় যৌতুক বাবদে আমির হামজা টাকা ও বিভিন্ন জিনিসপত্র দিয়েছেন ফিরোজা বেগম। এরপরও এক লাখ টাকা যৌতুক দাবিতে বিভিন্ন সময় সালমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আমির হামজা। ২০২৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর সকাল ৮টার দিকে আবারো যৌতুকের টাকার জন্য সালমাকে মারধর করে গ্যাস ট্যাবলেট খাওয়াইয়া দেয় সকল আসামি। আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পড়লে জুট মিলে দায়িত্ব পালনকালে এক আত্মীয়ের মাধ্যমে সংবাদ পান ফিরোজা। এরপরে জামাই আমির হামজাকে মোবাইল করা হলে সে জানায় সালমা অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। সেখানে গিয়ে না পেয়ে আবারো ফোন করলে বলে খুলনা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে আছে। কিন্তু সেখানে গিয়েও না পেয়ে আমির হামজার বাড়িতে গিয়ে সালমাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করা হলে সালমার লাশ যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে নিয়ে ময়নাতদন্ত শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এই ঘটনায় থানায় গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়। ফলে বাদ্য হয়ে গত ১১ জানুয়ারি এই ব্যাপারে আদালতে অভিযোগ দেন নিহত সালমার মা ফিরোজা বেগম। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ আগামী সাত দিনের মধ্যে মামলাটি গ্রহণ করে এবং পরবর্তী ব্যবস্থা সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করার জন্য কোতোয়ালী থানার ওসিকে আদেশ দিয়েছেন।
স্বাআলো/এস