নিজস্ব প্রতিবেদক: যশোরে মহাসিন আলী মণ্ডল হত্যা মামলার আসামি মেহেদী হাসান লিখনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
এসময় হত্যার কাজে ব্যবহৃত একটি ট্রাঙ্ক, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ, জুতা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। আসল ৩০ হাজারে উচ্চ সুদে সাত লাখ টাকা আদায় করতে না পারায় গালিগালাজের কারণে তাকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে লিখন।
রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) আদালতে হাজির করা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে লিখন।
আটক লিখন সদর উপজেলার নুরপুরের এলাকার বাসিন্দা।
নিহতের ভাই শহরতলীর নুরপুর গ্রামের মহিউদ্দিন মহির ছেলে কোরবান আলী এই ব্যাপারে শনিবার রাতে অজ্ঞাতনামা আসামি দিয়ে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেছেন।
যশোরে অজ্ঞাত যুবকের লাশ উদ্ধার
আসামি মেহেদী হাসান লিখন জানিয়েছেন, তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। একই এলাকার মহাসিন আলী মণ্ডল বিভিন্ন লোকের কাছে উচ্চমূল্যে সুদের কারবার করতো। লিখন বেশ কিছুদিন আগে মহাসিনের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা সুদে নেন। চুক্তি হয় প্রতি ১০ হাজারে মাসে তিন হাজার টাকা সুদ দেয়া লাগবে। সময় মতো সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় চক্রবৃদ্ধি হারে মোট সাত লাখ টাকা হয়েছে। ওই টাকা পরিশোধ না করায় লিখনকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে মহাসিন। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে তাকে খুন করার জন্য পরিকল্পনা করে লিখন। ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল পৌনে ৫টার দিকে একটি নম্বর থেকে মহাসিনের মোবাইলে রিং দিয়ে ডেকে নেয় লিখন।
রাতে লিখনের বাড়িতে নিয়ে প্রথমে ল্যাপটপের চার্জার দিয়ে গলায় পেচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তার বাড়িতে থাকা একটি বড় স্টিলের বাক্সে লাশটি নিয়ে শহরতলীর ঝুমঝুমপুরস্থ বালিয়াডাঙ্গা-মান্দিয়ায় একটি মসজিদের কাছে নিয়ে ফেলে দেয়। এরপরে শহরের আরএন রোড যাত্রিক পেট্রোল পাম্প থেকে এক লিটার ডিজেল কিনে লাশের
মুখে আগুন ধরিয়ে আলামত ধ্বংস করার চেষ্টা করে।
এরপরে ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে পুলিশ তাকে আটক করে।
যশোরে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামী পলাতক
এদিকে এই ঘটনার মামলায় জানা গেছে, ৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মোবাইলে কল পেয়ে বাড়ি থেকে বের হন মহাসিন। রাতে বাড়ি না ফেরায় তার স্ত্রী সাথী খাতুন ও ভাই কোরবান আলীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্য তার মোবাইলে রিং দিলে রিসিভ করে না। ফলে পরদিন ৯ ফেব্রুয়ারি বেলা ১১টার দিকে পরিবারের লোকজন থানায় যান। পরে খবর পেয়ে বালিয়াডাঙ্গা-মান্দিয়া থেকে একটি লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে সংবাদ পান।
সেখানে গিয়ে মহাসিনের লাশের শনাক্ত করেন। এই ঘটনায় ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে কোতোয়ালী থানায় মামলা করেন তার ভাই কোরবান আলী।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই খান মাইদুল ইসলাম রাজিব জানিয়েছেন, মামলাটি হাতে পেয়ে ঘটনাস্থলের আশেপাশে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা (সিসি) এবং মোবাইলের কললিস্টের সূত্র ধরে মেহেদী হাসান লিখনের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তাকে আটক করা হয়। এসময় তার কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ল্যাপটপের চার্জার, একটি স্টিলের বাক্স, একটি মোবাইল ফোনসেট ও এক জোড়া জুতা উদ্ধার করা হয়। রবিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে হত্যার দায় স্বীকার করে জেলহাজতে প্রেরণের আদেশ দিয়েছেন বিচারক জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান আহম্মেদ।
স্বাআলো/এস