শবেমেরাজ শব্দটির বাংলা অর্থ ঊর্ধ্ব গমনের রাত। আর ইসলামী শরীয়তের পরিভাষায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত সফরকে ‘ইসরা’ এবং মসজিদুল আকসা থেকে সাত আসমান পেরিয়ে আরশে আজিম সফরকে ‘মিরাজ’ বলা হয়।
নবুওয়াতের দশম বছর ৬২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬ রজব দিবাগত রাতে আল্লাহর সান্নিধ্যে মিরাজ গমন করেন মহানবী (সা.)।
পবিত্র কোরআনের সুরা বনি ইসরাইল ও সুরা নজমের আয়াতে, তাফসিরে এবং সব হাদিস গ্রন্থে মিরাজের ঘটনার বর্ণনা রয়েছে।
শবেমেরাজের গুরুত্ব ও ফজিলত
শবে মেরাজে ঊর্ধ্বাকাশে ভ্রমণ করে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) আল্লাহ তায়ালার সাক্ষাৎ লাভ করেছিলেন। তাই রাতটি মুসলিমদের কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
তবে এ উপলক্ষে বিশেষ কোনো আমলের কথা ইসলামি শরীয়তে উল্লেখ করা হয়নি। তারপরও এ রাতে ধর্মপ্রাণ মানুষ বিশেষ ইবাদতে লিপ্ত থাকতে পছন্দ করেন। বিশেষত এ রাতকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মসজিদে কিংবা বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের উদ্যোগে ওয়াজ এবং দোয়ার মাহফিল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। সারারাত তাসবীহ-তাহলীল পাঠ করেন অনেকে।
বিশেষ গুরুত্ব থাকায় আজ রাতে মহান রাব্বুল আলামিনের রহমত কামনায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা মসজিদে বা নিজগৃহে সালাত আদায়, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আসকারের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করবেন। অনেকে নফল রোজাও পালন করবেন।
রজব মাস আমলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি মাস। মহানবি (স.) এ মাস থেকে রমজানের প্রস্তুতি শুরু করতেন। এ বিষয়ে উম্মে সালমা (রা.) বলেন, নবী করিম (স.) রমজান মাস ছাড়া সবচেয়ে বেশি রোজা পালন করতেন শাবান মাসে, অতঃপর রজব মাসে।
এ প্রসঙ্গে আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) বলেন, যখন রজব মাস আসত, তা আমরা নবিজির (স.) আমলের আধিক্য দেখে বুঝতে পারতাম।
৬২০ খ্রিস্টাব্দ হযরত মুহাম্মদের (সা.)-এর জন্য দুঃখ ও শোকের বছর ছিলো। এ সময় তিনি তার কঠিন সময়ের দুজন প্রিয় ব্যক্তি স্ত্রী খাদিজা (রা.) এবং চাচা আবু তালেবকে হারিয়েছেন। তা ছাড়া ইসলামের দাওয়াত নিয়ে তায়েফ গেলে সেখান থেকেও আশাহত হয়ে ফেরেন। এরপর মহান আল্লাহ ইসরা ও মেরাজের মাধ্যমে প্রিয় রাসুলকে বিশেষভাবে সম্মানিত করেন।
এই রাতে প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দিদার লাভ করেন এবং আল্লাহর কাছ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের বিধান নিয়ে দুনিয়ায় ফিরে আসেন।
স্বাআলো/এস