সরকার ও সেনাবাহিনী একে অপরের বিপরীতে অবস্থান নেয়নি বরং একসঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশনসের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উদ-দৌলা। আজ সোমবার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সেনাসদরের মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম। তারা জানান, দেশের সাম্প্রতিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং রাখাইন রাজ্যে মানবিক করিডর নিয়ে আলোচিত বিভিন্ন বিষয়ে সেনাবাহিনীর অবস্থান স্পষ্ট করেছে সেনাসদর।
এক প্রশ্নের উত্তরে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজিম-উদ-দৌলা বলেন, “সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে কোনো মতপার্থক্য বা বিভেদ নেই। মিডিয়ায় যেভাবে বিভ্রান্তিকরভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে, তা সঠিক নয়। আমরা সমঝোতার মাধ্যমে একসঙ্গে কাজ করছি এবং ভবিষ্যতেও করব।”
এসময় কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, “দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়—এমন কোনো কার্যক্রমে সেনাবাহিনী জড়িত থাকবে না।”
সেনাসদরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ৪০ দিনে সেনাবাহিনী ২৪১টি অবৈধ অস্ত্র ও ৭০৯ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। আগস্ট মাস থেকে এ পর্যন্ত উদ্ধার করা হয়েছে ৯ হাজার ৬১১টি অবৈধ অস্ত্র ও ২ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬১ রাউন্ড গোলাবারুদ। একই সময়ে ১৪ হাজার ২৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে কিশোর গ্যাং সদস্য, তালিকাভুক্ত অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতরা রয়েছেন।
মাদকবিরোধী অভিযানের প্রসঙ্গে বলা হয়, গত এক মাসে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪৮৭ জন মাদক ব্যবসায়ী এবং আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত মাদক সংশ্লিষ্ট ৪ হাজার ৪০০ জনকে আটক করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজা ও অবৈধ মদ।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তা পরিকল্পনার কথা জানিয়ে সেনাসদর জানায়, ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে দুই সপ্তাহব্যাপী বিশেষ টহল, চেকপোস্ট স্থাপন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও টিকিট কালোবাজারি দমনে অভিযান চালানো হবে। জাতীয় মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ টার্মিনালগুলোতে সেনাবাহিনীর তৎপরতা থাকবে।
এছাড়া কোরবানির পশুর হাটে চাঁদাবাজি, ছিনতাই এবং জনদুর্ভোগ রোধে সেনাবাহিনী নিয়মিত টহল ও বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে বলেও জানানো হয়।